Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএনপিতে আরেকটি ‘নিরানন্দ’ ঈদের প্রস্তুতি

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ এপ্রিল ২০২৪ ২০:০৩

ঢাকা: সরকারবিরোধী আন্দোলনে তেমন কোনো সাফল্য ঘরে তুলতে না পারলেও দলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী কারাগারে। দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আইনের চোখে পালাতক। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি দল পরিচালনা করছেন তিনি। সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে সম্প্রতি দেশে ফেরা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শারীরিক অবস্থাও খুব একটা বেশি ভালো না। এমন পরিস্থিতিতে গত কয়েক বছরের মতো এবারও অনেকটা ‘নিরানন্দ’ ঈদ এসেছে বিএনপি নেতাদের জন্য।

দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বর্তমানে কারাগারে আছেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি মোস্তফা কামাল হৃদয়, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এ খোকন, উত্তরা থানার ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে।

সম্প্রতি হাজিরা দিতে গেলে কারাগারে পাঠানো হয় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুসহ ৫১ জন নেতাকে।

কয়েক বছর ধরে কারাগারে আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, তারেক রহমানের এপিএস মিয়া নুরুদ্দিন অপু, ঢাকা দক্ষিণের সাবেক কমিশনার হারুন অর রশিদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আজিজুর রহমান মুসাব্বির, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক কাজী জিয়াউদ্দিন বাসিত, ঢাকা কলেজ ছাত্রদল নেতা জামাল হোসেন, কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হুমায়ুন কবীর, প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ব্যক্তিগত সহকারী মনির হোসেনসহ অনেকে।

এসব নেতার ঈদ হবে কারাগারেই। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রমজান মাসজুড়ে কারাবন্দি নেতাদের বাসায় বাসায় গিয়ে সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। পৌঁছে দিয়েছেন ঈদ উপহার। অনেক পরিবারকে গুলশান কার্যালয়ে ডেকে আর্থিক সহযোগিতাও করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।

২০১৮ সাল ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের মামলায় কারাগারে পাঠানোর পর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চারটি ঈদ কারাগারেই কেটেছে। এর মধ্যে একটি ঈদ কেটেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়ার পর একটি ঈদ এভারকেয়ার হাসপাতালে আর বাকি ছয়টি ঈদ গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় কেটেছে। এবারও ‘ফিরোজা’য় ঈদ উদ্‌যাপন করবেন খালেদা জিয়া।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৬ জুন চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছিলেন খালেদা জিয়া। নির্বাহী আদেশে কারামুক্ত হওয়ার পর ঈদের রাতে দলের শীর্ষ নেতারা ফিরোজায় গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করে আসছেন। এবারও ঈদের রাতে ফিরোজায় গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করার কথা রয়েছে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের।

এবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বেশির ভাগ শীর্ষ নেতা ঢাকায় ঈদ করবেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকায় ঈদের নামাজ আদায় করবেন।

স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বরাবরের মতো এবারও নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করবেন। আর ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু যুক্তরাজ্যে এবং সালাউদ্দিন আহমেদ ভারতে ঈদ করবেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০০৮ সাল থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ব্রিটেনে ঈদ করছেন। এবারও তিনি সেখানেই ঈদ করবেন। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান সারাবাংলাকে জানান, ঈদের দিন লন্ডনে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করার কথা রয়েছে তারেক রহমানের।

এদিকে ঈদের দিন সকালে ঢাকায় থাকা দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতে যাবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

ঈদ ঈদুল ফিতর ঈদের নামাজ বিএনপি বিএনপি নেতাদের ঈদ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর