Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঈদের দিন বাইক দুর্ঘটনায় ৭৬ জন পঙ্গু হাসপাতালে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১২ এপ্রিল ২০২৪ ২২:১০

ঢাকা: ঈদের দিন মানেই যানজটমুক্ত ফাঁকা রাস্তা। আর সেই সুযোগে বেপরোয়া গতিতে মোটরবাইক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয় তরুণরা। এবারের ঈদুল ফিতরের দিনেও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় হতাহতের অনেক ঘটনা ঘটেছে। এদিন বাইক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতাল বা নিটোরে ভর্তি হয়েছেন ৭৬ জন। এদের মধ্যে অনেকেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে বাইক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে নিটোরের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন মো. ফাহাদ (২০) নামে এক তরুণ। এ সময় কথা হয় তার মা জিলোয়ারা বেগমের সঙ্গে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ছেলে সকালে বাইক নিয়ে বের হয়েছিল। পরে শুনতে পারি সে এক্সিডেন্ট করেছে। তার এক পা ভেঙে গেছে।’

এদিন হাসপাতালের ইমার্জেন্সি ও ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার সুজিত কুমার বৈদ্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের দিন নিটোরে ২৫৬ জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এদের মধ্যে ৭৬ জনই মোটরবাইক দুর্ঘটনার শিকার। যাদের বেশিরভাগের বয়স ১৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে।’

তিনি বলেন, ‘আজ দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রায় দেড়শ রোগী এসেছেন। তাদের বড় একটি সংখ্যা বাইক দুর্ঘটনার শিকার। গুরুতর আহত বেশ কয়েকজনের হাত, পা কেটে ফেলে দিতে হয়েছে।’

ডা. সুজিত আরও বলেন, ‘আহত রোগীদের সঙ্গে কথা জানতে পেরেছি, তারা ঈদের সময় ফাঁকা সড়কে অতিরিক্ত গতিতে বাইক চালাতে গিয়ে আহত হয়েছেন।’

এদিন দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, ঈদের ছুটিতে হাসপাতালের বহির্বিভাগ ছাড়া সব বিভাগ খোলা রয়েছে। হাসপাতালে দুর্ঘটনায় আহত রোগী বেশি আসছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল হাসপাতালে ২৫০ জনের বেশি রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। আজ দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সময়ে ২০০ এর কাছাকাছি রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন। আহত রোগীদের বড় একটা সংখ্যা হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগী।

বিজ্ঞাপন

অপরদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে হাসপাতালের ইমার্জেন্সি ও ক্যাজুয়ালিটি সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে দুর্ঘটনায় শিকারের সংখ্যা বেশি থাকে। আর এদের বেশিরভাগ তরুণ। চিকিৎসক হিসেবে আমরা সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করি। কারণ, তারা দেশের সম্পদ।’

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘তরুণদের হাতে অভিভাবকেরা কেন বাইক তুলে দেন? এরা মাথায় ঠিক মতো হেলমেট পর্যন্ত পরে না। ঈদের ছুটিতে ফাঁকা রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাতে গিয়ে পরিবারের ঈদ আনন্দ মূহূর্তেই ফিকে করে দিচ্ছে। এ জন্য তরুণদের হাতে বাইক তুলে আগে অভিভাবকদের আরও চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।’

ঈদের ছুটিতে ঢাকার রাস্তায় দায়িত্বপালনকারী একাধিক ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট সারাবাংলাকে বলেছেন, ফাঁকা সড়কে অল্প বয়সী তরুণরা কোনো ধরনের আইন-কানুন মানতে চান না। হেলমেট ছাড়া ফাঁকা রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাতে গিয়ে তারা আহত হন। পরে তাদের বাঁচাতে হাসপাতালে পাঠাতে হয়।’

সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে ছুটির দিনে ফাঁকা রাস্তায় আইন মেনে সাবধানে মোটরবাইক চালানোর পরামর্শ দেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

ঈদের দিন পঙ্গু হাসপাতাল বাইক দুর্ঘটনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর