Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গরম উপক্ষো করে বিনোদন কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ এপ্রিল ২০২৪ ০০:৩২

ঢাকা: ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন রাজধানীসহ সারাদেশে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। তবুও গরম উপেক্ষা করে রাজধানীতে ঘুরতে বেরিয়েছে মানুষ। রাস্তাঘাট তুলনামূলক ফাঁকা থাকলেও বিনোদন কেন্দেগুলোতে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। তবে অধিকাংশ মানুষই ঘুরতে বের হয়েছেন রোদ কমার পর বিকেলে।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) ঈদের দ্বিতীয় দিন রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র ভিড় জমান নানা বয়সী নারী, পুরুষ ও শিশু। এদিন রাজধানীর হাতিরঝিল, ধানমন্ডি লেক, চিড়িয়াখানা, রমনা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, আগারগাঁওয়ে বিমানবাহিনী জাদুঘর এবং বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার দেখতে বের হন অনেকে। এ ছাড়াও, অনেকে তিনশ ফিট, মাদানী এভিনিউর একশ ফিট, ডেমরার চিটাগাং রোড, বসিলা ব্রিজসহ ইত্যাদি স্থানেও ভিড় করেন অনেকে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঈদমেলা ঘিরেও জমজমাট ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। পুরান ঢাকার বংশালে সিটি করপোরেশন আয়োজিত ঈদ মেলায় নানান রাইড ঘিরে শিশুসহ নানা বয়সীদের ভিড় দেখা যায়। এখানে শিশুদের জন্য নানারকমের খেলনার পাশাপাশি, রঙ-বেরঙের বেলুন, হাড়ি-পাতিল যেমন পাওয়া যাচ্ছে তেমনি রয়েছে নাগরদোলা, চরকি, স্লাইড ও অন্যান্য খেলার সুব্যবস্থা।

রাজধানীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানা। ঈদের দ্বিতীয় দিন আর শুক্রবার হওয়ায় সকাল থেকেই চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের ছিল উপচেপড়া ভিড়। গতকাল ঈদের দিন লাখের উপর দর্শনার্থী এলেও আজ দুই লাখের বেশি মানুষ চিড়িয়াখানা পরিদর্শনে আসেন।

চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের দিন চিড়িয়াখানার দর্শনার্থী এসেছিলেন এক লাখের একটু বেশি। আজ আমরা যে পরিমাণ দর্শনার্থীর সমাগম আশা করেছি তার থেকেও বেশি এসেছেন। বিকেল পর্যন্ত দুই লাখ দশ হাজারের বেশি দর্শনার্থী এসেছেন।‘ শিশুদের ভিড় বেশি হলেও নানা বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর ছিল বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাঘ, সিংহ, হরিণ, জিরাফের খাঁচায় ভিড় বেশি হলেও সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ ছিল সাপের খাঁচা ঘিরে।’

এদিকে, বরাবরের মতোই ঈদের এই ছুটিতে রাজধানীর সব বিনোদন কেন্দ্রকে হার মানিয়েছে হাতিরঝিল। শুক্রবার সকাল থেকেই নগরবাসীর পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে হাতিরঝিল। হাতিরঝিলের দুই পাশে দাঁড়িয়ে ও বসে আড্ডা মারতে দেখা যায় অনেককে। এ ছাড়াও, অনেকেই বেছে নেন ওয়াটার বোট। ঈদ উপলক্ষ্যে হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। ৩০ মিনিট হাতিরঝিলে ঘুরতে খরচ করতে হচ্ছে জনপ্রতি ৮০ টাকা।

হাতিরঝিলে মূলত আশপাশের এলাকা যেমন- রামপুরা, মালিবাগ, বনশ্রী, মধুবাগ, মগবাজার, বাড্ডা, তেজগাঁও থেকেই বেশি মানুষ আসেন। এছাড়া ঢাকার অন্যান্য এলাকা থেকেও অনেকেই ভিড় করেন। বন্ধুদের সঙ্গে হাতিরঝিলের মধুবাগ প্রান্তের সিঁড়িতে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন সিয়াম। ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিয়ামের বাসা মধুবাগ।

সিয়াম জানালেন, শুধু ঈদের দিনই নয়, বাসার কাছেই এমন মনোরম পরিবেশ থাকায় বন্ধুদের নিয়ে এখানেই আড্ডায় মেতে ওঠেন তারা। এই গরমে আর কোথাও না যেয়ে তাই আজও এখানেই আড্ডা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘হাতিরঝিলে এলে ভালো লাগে। গাছপালা ঘেরা হওয়ায় কিছুটা ঠান্ডাও আছে। ঈদে একটু ভিড় বেশি হয়। তবুও ভালো লাগে। অনেকক্ষণ প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকা যায়।’

তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে সাঁতারকুল থেকে হাতিরঝিলে ঘুরতে এসেছিলেন সাইদ-হাফিজা দম্পতি। পুলিশ প্লাজার পেছনে সিরামিকের হাতি ঘিরে তৈরি পার্ক মতো জায়গায় বসে ছিলেন তারা। পাশেই ঘাসের মধ্যে খেলছিল মেয়ে সায়মা। তারা বলেন, ঈদের ছুটিতে কই যাব ভাবতে ভাবতে আর কোনো জায়গার কথা মাথায় এলো না। তাই হাতিরঝিলেই এলাম। জানতাম এমন ভিড় হবে, তাও ভালো লাগছে। মেয়েটা ঘাসের মধ্যে দৌড়াচ্ছে আর খেলছে। ভালো লাগছে। এত নিরাপদ পরিবেশ আর কোথায় পাব।

এ ছাড়াও, ফাঁকা ঢাকায় পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে রিকশা বা গাড়িতেও ঘুরতে বেরিয়েছেন অনেকে। অলগলি তো বটেই রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কেও আজ রিকশা চলাচল করছে। ঈদে ভাড়া বেশি হলেও গণপরিবহণ কম থাকায় মানুষ বাধ্য হয়ে রিকশাকেই বেছে নিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও উঠে এসেছে ঈদের ঘোরাঘুরির চিত্র। কেউ পরিবার নিয়ে রিকশায় ঘোরার ছবি দিচ্ছেন, আবার কেউ বা বিনোদন কেন্দ্রের। আসলে এভাবেই কাটছে রাজধানীবাসীর ঈদ।

রাজধানী ঘুরে ছবি তুলেছেন সারাবাংলার সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট হাবিবুর রহমান

সারাবাংলা/আরএফ/পিটিএম

গরম বিনোদন কেন্দ্র ভিড় মানুষ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর