চলছে বর্ষবরণের প্রস্তুতি, মার্কেট বন্ধ থাকায় নেই কেনাকাটা
১৩ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৩২
ঢাকা: গত কয়েক বছর ধরে পহেলা বৈশাখ রোজার মধ্যে পড়ে যাওয়ায় অনেকটা ঘনঘটা ছাড়াই বাংলা বর্ষকে বরণ করা হয়েছে। কিন্তু এ উপলক্ষ্যে আগের বছরগুলোতে পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে মহোৎসবে চলত কেনাকাটা। রাজধানীর বিপণিবিতান ও ছোটবড় মার্কেটগুলোতে লেগে থাকতো ভিড়। কিন্তু এবারের রোজার ঈদের পরপরই পহেলা বৈশাখ হওয়ায় বৈশাখী আমেজ তেমন নেই। কারণ এখনো ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতাশূন্য ফুটপাত। এদিকে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে দেশের প্রথম সারির বুটিকগুলোও নানা আয়োজন করে থাকে। নতুনত্ব নিয়ে আসে পোশাকে। ছোট- বড় সকল মানুষের পোশাকেই থাকে বৈশাখের ছোঁয়া। এবার সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ চলে আসায় বৈশাখের উৎসবের রঙ ঢাকা পড়েছে।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর ছোট বড় মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে প্রায় অধিকাংশ মার্কেটই বন্ধ। বন্ধ দেখা গেছে ফুটপাতের দোকানও। রাজধানীর গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররম, মতিঝিল ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কিছু দোকান খুললেও নেই কোনো ক্রেতা। বেশিরভাগ দোকানপাটও বন্ধ। অথচ আগে এসময় কেনাকাটার ধুম পড়ে যেত। এবার গুলিস্তানের বেশিরভাগ শপিংমল বন্ধ। ফুটপাতে যেসব দোকান খোলা আছে ক্রেতা সেখানে নেই বললেই চলে। যে দু-একজন ক্রেতা রয়েছে তারা বৈশাখের উৎসব নয় ঈদের পর বাড়ি যাওয়ার জন্য রাস্তায় বের হয়েছে। তারা টুকটাক কাপড়চোপড় কিনছেন। দোকানদাররা অলস সময় পার করছেন।
এদিকে গুলিস্তানের হকার্স ট্রেড সেন্টার মার্কেট, রমনা ভবন মার্কেট, পীর ইয়ামেনী মার্কেট, ট্রেড সেন্টার উত্তর মার্কেট এবং ফুলবাড়িয়ার পাইকারি মার্কেটে তালা লাগানো। রাজধানীর পল্টন মোড় থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট এলাকা, মতিঝিল, গুলিস্তান, আজিজ সুপার মার্কেট, নিউমার্কেট, গাউছিয়া, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, হাতিরপুল, ধানমন্ডি, মিরপুর রোড, সাতমসজিদ রোড, মিরপুর, উত্তরা, গুলশান, মৌচাক, শান্তিনগর, নয়াপল্টন এলাকায় ফুটপাত ঘিরে ক্রেতার দেখা পাওয়া যায়নি। অথচ বৈশাখ উপলক্ষে কয়েকদিন আগে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় বিশেষ মেলা। কিন্তু মেলারও তেমন কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
বেইলী রোডের বড় শপিংমল বন্ধ। ফুটপাতে কিছু চুড়ি নিয়ে বসেছেন কয়েকজন নারী। এদের মধ্যে আকলিমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রতি বছর এ সময় প্রচুর বেচাবিক্রি করি। গত বছর রোজার মধ্যে পহেলা বৈশাখ পড়লেও বিক্রি হয়েছে। এবার কোনো কাস্টমার নেই। দেখেন সারা এলাকা খালি। কেউ নাই। সব ছুটিতে বাড়ি গেছে। তারপরেও বসে আছি দেখি কিছু বিক্রি হয় কী না।’
বেইলী রোডে কথা হয় ক্রেতা সুষ্মিতা দাসের সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘নিউ মার্কেট গাউছিয়া সব বন্ধ। ভেবেছি মৌচাক খোলা। সেখানে গিয়েও ফিরে আসছি। শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং করে ব্লাউজ কেনা দরকার। কিন্তু সেই সকাল থেকে ঘুরছি। কোনো মার্কেট খোলা পাচ্ছি না।’
এদিকে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি চলছে। রমনার বটমূল থেকে গান, কবিতায় বরণ করা হবে বাংলা নতুন বছর ১৪৩১। এখন চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে রমনার বটমূলে অনুশীলন করেন সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র ছায়ানটের শিল্পীরা। ১৭০ জন শিল্পী মঞ্চে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অনুশীলন করেছেন। রমনায় একসঙ্গে সব শিল্পীর বসার মতো করে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। বসানো হয়েছে পাটাতন। বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে নির্দিষ্ট সীমানা। বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে ছায়ানটের পক্ষ থেকে যাদের প্রবেশের বিশেষ কার্ড দেওয়া হয়েছে, তারাই শুধু সীমানার ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন। অন্য সবাই বর্ষবরণের এ আয়োজন উপভোগ করতে পারবেন।
সারাবাংলা/জেআর/একে