ঢাকা: ভোরের আলো তখন ফুটছে। এক রাত পেরিয়ে শুরু হচ্ছে নতুন এক দিন। তবে এই দিনটি তো আর নিছকই এক দিন নয়, বছরের প্রথম দিন। পুরনো বছরকে পেরিয়ে নতুন বছরের যাত্রা শুরুর দিন। পহেলা বৈশাখ, নতুন বঙ্গাব্দ ১৪৩১ সালের সূচনার দিন। বাঙালির আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠার দিন।
রোববার (১৪ এপ্রিল) সেই দিনটি বরণ করে নিতে বরাবরের মতোই রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী রমনার বটমূলে জড়ো হয়েছিলেন সংস্কৃতি কর্মীরা। ছায়ানটের আয়োজনে দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় বৈশাখ তথা বর্ষবরণের আয়োজন।
চৈত্র সংক্রান্তি পেরিয়ে রোববার বৈশাখের প্রথম ভোরে শিল্পী মর্তুজা কবির মুরাদ তার বাঁশিতে তোলের আহির ভৈরবী রাগের সুর। এরপর ছায়ানটের শিল্পীরা সম্মিলিত কণ্ঠে পরিবেশন করেন ‘আঁধার রজনী পোহাল’।
আরও পড়ুন-সম্পন্ন প্রস্তুতি, অপেক্ষা বর্ষবরণের
একে একে সত্যম কুমার দেবনাথের কণ্ঠে ‘বিমল আনন্দে জাগো রে’ এবং তানিয়া মান্নানের কণ্ঠে ‘তোমার সুর শুনায়ে’ গানের ধ্বনিতে নির্মল আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে রমনায়। এসব সুর-গানেই বঙ্গাব্দকে আবাহন করা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টার এ আয়োজন শেষ হয় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।
রোববার ভোর ৬টার দিকে শুরু হওয়া এ আয়োজন দেখতে জড়ো হয়েছিলেন রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নাগরিকরা। ছেলে-বুড়ো, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই হাজির হন রমনায়। মেয়েদের বেশির ভাগের পরনেই সাদা-লাল শাড়ি, ছেলেদের পরনে সাদা-লাল পাঞ্জাবি।
প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে সাজানো হয় ছায়ানটের এ বছরের বর্ষবরণের আয়োজন। সম্মিলিত কণ্ঠে ১১টি ও একক কণ্ঠে ছিল ১৫টি গানের পরিবেশনা। সঙ্গে ছিল পাঠ ও আবৃত্তি।
দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। এ ছাড়া ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজেও এটি সরাসরি দেখানো হয়।