সংসদ এলাকায় ড্রোন, সাবেক এমপির ছেলে মুচলেকায় ছাড়া
১৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:১৭
ঢাকা: নববর্ষ উপলক্ষে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আঁকা আল্পনার ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে গিয়ে আটক হয়েছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম গোলাম রেজার ছেলে হোসেন মোহাম্মদ মায়াজ (২৮)। পরে পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন তিনি।
পহেলা বৈশাখের পর দিন গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ আটক করেছিল মায়াজকে। পরে ওই দিনই তিনি ওই এলাকায় ড্রোন ওড়ানোর ভুল স্বীকার করে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, সংসদ ভবন, পুরাতন বিমানবন্দর, চন্দ্রিমা উদ্যান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গণভবন ও বঙ্গভবনসহ রাজধানীর ভিভিআইপি ও স্পর্শকাতর এলাকায় ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ-ও এই এলাকার মধ্যেই পড়ে। মায়াজ সেখানেই ড্রোন উড়িয়েছিলেন।
মোহাম্মদ মায়াজ বলেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আঁকা আলপনার একটি ভিডিওগ্রাফি ও ছবি তোলার জন্য তিনি অনুমতি না নিয়েই ব্যক্তিগত ড্রোন MAVIC AIR-3 ব্যবহার করেন, যা তার অনিচ্ছাকৃত ভুল। সংরক্ষিত এলাকাটির নিরাপত্তার স্বার্থে তার সচেতন হওয়া উচিত ছিল জানিয়ে তিনি ভুলের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন।
নিরাপত্তার জন্য পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ড্রোন ওড়ানোর ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আছে। বিশেষ করে রেড জোনে ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ।
আইন অনুযায়ী দেশের আকাশ সীমায় ড্রোন, রিমোটলি পাইলটেড এয়ারক্রাফট সিস্টেম, রিমোট কন্ট্রোলড খেলনা বিমান, ঘুড়ি ও লেজার রশ্মি ব্যবহারে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। অনুমতি নিতে একটি নির্দিষ্ট সময় আগে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে (www.caab.gov.bd) দেওয়া ফরম পূরণ করতে হবে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি কিছু উৎসাহী ব্যক্তি, বেসামরিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিনা অনুমতিতে বাংলাদেশের আকাশসীমায় ড্রোন, রিমোটলি পাইলটেড এয়ারক্রাফট সিস্টেম (ইউএভি/আরপিএএস), রিমোট কন্ট্রোলড খেলনা বিমান, ঘুড়ি ও ফানুস ইত্যাদি উড্ডয়ন করছেন। জনগণের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এ ধরনের অননুমোদিত উড্ডয়ন, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
রেড জোনে ড্রোন উড্ডয়ন বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেঁজগাও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের এডিসি মো. রওশানুল হক সৈকত বলেন, নিরাপত্তার জন্য পৃথিবীর সব দেশেই স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ড্রোন ওড়ানোর ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ আছে। আমাদের দেশেও স্পর্শকাতর এলাকায় ড্রোন ওড়ানো নিষেধ। এটা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের নিরাপত্তার জন্য জরুরি।
এডিসি সৈকত আরও বলেন, বাংলাদেশে ড্রোন নিবন্ধন ও উড্ডয়ন নীতিমালা-২০২০ অনুযায়ী ড্রোন অপারেশন জোন রয়েছে, যেখানে রেড জোনে ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ। বিমানবন্দর বা বিশেষ কেপিআই রেড জোনের মধ্যে পড়েছে। বিশেষ অনুমতি ছাড়া রেড জোনে ড্রোন ওড়ানো যাবে না, এ বিষয়ে সবারই সচেতন হওয়া জরুরি। যেকোনো দেশের রাষ্ট্রের নিরাপত্তার সঙ্গে কেপিআইয়ের নিরাপত্তা ওতপ্রোতভাবে যুক্ত।
সারাবাংলা/টিআর