তাপে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা
১৭ এপ্রিল ২০২৪ ২১:০৩
চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। বৈশাখের প্রথম দিন থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ শুরু হলেও তা এখন তীব্র তাপপ্রবাহের রূপ নিয়েছে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অফিসও চুয়াডাঙ্গার জন্য কোনো সুখবর দিতে পারছে না।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক জাহিদুল ইসলাম জানান, বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। ওই সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৭ শতাংশ।
এটি কেবল আজকের নয়, চলতি মৌসুমেই চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে এ দিন বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওই সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২২ শতাংশ। এরও আগে দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ৩১ শতাংশ।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। জেলায় শিগগিরই বৃষ্টির সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না।
এদিকে তাপপ্রবাহের কারণে জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা বিরাজ করছে। নিম্ন ও খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে বিপাকে। বাইরে রোদের তীব্র তাপ ও অসহ্য গরমে মানুষ এক প্রকার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। অতি প্রয়োজন কেউ ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। তবে নিম্ন আয়ের দিনমজুর ও শ্রমিকরা জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদ ও গরম উপেক্ষা করে কাজের তাগিদে বাইরে বের হচ্ছেন।
শহরের কোর্ট এলাকায় ভাতের হোটেল ব্যবসায়ী রবিউল বলেন, প্রচণ্ড গরমে শহরের লোকজন আসছে না। এ কারণে বেচাবিক্রি নেই বললেই চলে। ব্যবসায় চরম মন্দা যাচ্ছে।
রিকশাচালক আব্দুর রশিদ বলেন, রোজার মাসের শেষের দিক থেকেই গরম বাড়তে শুরু করেছে। রোজগারও কমতে শুরু করেছে। মানুষজন শহরে কম আসায় রিকশা ভাড়া কমে গেছে। কোনোমতে ঈদ পার হলেও ভালো রোজগার না হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকটা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে।
তীব্র তাপপ্রবাহে আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। তাদের প্রতি পরামর্শ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, তাপপ্রবাহ থেকে ধান রক্ষার জন্য জমিতে সবসময় ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখতে হবে। এসময় কোনোভাবেই জমিতে যেন পানির ঘাটতি না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় ধানের শীষ ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হতে পারে জানিয়ে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার আগেই প্রতিরোধক হিসেবে বিকেলে ট্রুপার ৮ গ্রাম ১০ লিটার পানি অথবা নেটিভো ৬ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে পাঁ৭ দিনের ব্যবধানে দুবার স্প্রে করতে হবে। ধানে বিএলবি ও বিএলএস রোগ ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ৬০ গ্রাম থিওভিট, ৬০ গ্রাম পটাশ, ২০ গ্রাম জিংক ১০ লিটার পানিতে সমভাবে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।
সারাবাংলা/টিআর