দরপত্র জটিলতায় আটকে জাতীয় চিত্রশালা উন্নয়ন প্রকল্প
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৪৮
ঢাকা: দরপত্র জটিলতায় আটকে গেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা উন্নয়ন প্রকল্প। এজন্য মেয়াদ বাড়ছে ‘জাতীয় চিত্রশালা এবং জাতীয় সংগীত ও নত্যৃকলা কেন্দ্রের সম্প্রসারণ ও অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের। শুরু থেকে এটির আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৩৯ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৪৪ শতাংশ। এছাড়া চলতি অর্থবছরে প্রকল্পের আর্থিক অগ্রতি হয়েছে ৫ দশমিক ১২ শতাংশ এবং ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।
প্রকল্পটির নিয়ে গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির (পিএসসি) সভা। সেখানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ওই সভয় সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পিএসসি সভায় প্রকল্প পরিচালক বলেন, যোগ্য ঠিকাদারের অভাব এবং মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেন্ট্রাল এসির তিনবার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সর্বশেষ গত বছরের ৬ মে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রে আহ্বানকারী ৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের কোট করা মূল্য ২৬ কোটি ৩০ লাখ ৯২ হাজার টাকা, যা প্রাক্কলিত মূল্যের চেয়ে ৪ কোটি ১১ লাখ ৪১ হাজার টাকা বেশি। এছাড়া আরও বিভিন্ন কারণে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়ায় এখনো দরপত্রের কার্যাদেশ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, পাশাপাশি প্রকল্পের অনুকূলে চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ না পাওয়ার কারণে কাজের গতি কমেছে। এ সব কারণে প্রকল্পে মেয়াদ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত এক বছর বৃদ্ধির প্রয়োজন। প্রকল্প পরিচালকের এমন প্রস্তাবে পরিপ্রেক্ষিতে সভায় বলা হয়, আর কোনো মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে না, এ শর্তে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধিতে সবাই একমত পোষণ করে।
পরিকল্পনা কমিশনের উপসচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ওই সভায় বলেন, প্রকল্পটির মোট ব্যয় ১৪৯ কোটি ৮৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুনে বাস্তবায়নের কথা। এছাড়া প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে- জাতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্যের সংরক্ষণ, উন্নয়ন, সমৃদ্ধ ও প্রসার করা, সংগীত, নৃত্য ও আবৃতি শিল্পীদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর আয়োজন এবং অপসংস্কৃতির করাল গ্রাস থেকে এদেশের সংগীত ভুবনকে রক্ষা করা।
এজন্য প্রথম পর্যায়ে নির্মিত জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্রের তৃতীয়, চতুর্থ পঞ্চম তলায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ৭০০ আসন বিশিষ্ট অডিটরিয়াম, প্রয়োজনীয় সংখ্যক রিহার্সেল রুম, আর্কাইভস, ভিডিও রেকর্ডিং রুম, লাইব্রেরি, সেমিনার হল, প্রশিক্ষণ কক্ষ ও অফিস কক্ষ নির্মাণের মাধ্যমে অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করা। এছাড়া বস্তুগত সুবিধা নিশ্চিত করে দেশের সৃষ্টিশীল চারুকলার সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রদর্শনি আয়োজনের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মিত জাতীয় চিত্রশালা ভবনের ওপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অবকাঠামো নির্মাণ ও অন্যান্য সুবিধা সৃষ্টি করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পিএসসি সভায় আরও জানানো হয়, শুরু থেকে ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি ৩৯ শতাংশ এবং ক্রমপুঞ্জিত বাস্তব অগ্রগতি ৪৪ শতাংশ। প্রকল্পের অনুকূলে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। অবমুক্ত করা হয়েছে ৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। চলতি অর্থবছরে প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৫ দশমিক ১২ শতাংশ এবং ভৌত অগ্রগতি ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিল্পকলা একডেমির সচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলাম ঠিকই। কিন্তু প্রকল্প সম্পর্কে তেমন কিছুই বলতে পারব না। আপনি প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেন।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্ধিত সময় ২০২৫ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে কি না আমি জানি না।’
সারাবাংলা/জেজে/এনএস