Sunday 27 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুরে দণ্ডিত ২ ভাই কারাগারে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৫৫ | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৪ ২০:১৮
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় ১৬ বছর আগে দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুরের মামলায় সাজা পাওয়া দুই আসামিকে গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন।

গ্রেফতার দুজন হলেন— নেজাম উদ্দিন ও জামাল উদ্দিন। তারা রাউজান উপজেলার পশ্চিম রাউজান ইউনিয়নের হাজী মো. নুরুল আমিনের ছেলে।

ওসি জাহিদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালত থেকে সাজা পরোয়ানা জারি হয়। তারা দুই বছর করে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। পরোয়ানামূলে তাদের গ্রেফতার করে আজ (রোববার) আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

মামলার নথিপত্র পর্যালোচনায় জানা গেছে, রাউজান উপজেলার পশ্চিম রাউজান ইউনিয়নের কেউটিয়া গ্রামে ২০০৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বণিকপাড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অমলেন্দু বণিক বাদী হয়ে ১ অক্টোবর রাউজান থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে সাতজনকে আসামি করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, তারা পূর্বপুরুষের আমল থেকে কেউটিয়া গ্রামের বণিকপাড়ায় রাধাকৃঞ্চ মাধবানন্দ সেবাশ্রম মন্দিরের পাশে সর্বজনীনভাবে দুর্গোৎসব করে আসছিলেন। আসামিরা ২০০৫ সাল থেকে তাদের বণিকপাড়া থেকে পরিকল্পিতভাবে উচ্ছেদের জন্য বাড়িভিটা দখলের উদ্দেশে বিভিন্নভাবে জ্বালাতন করে আসছিল। বেদার মিয়া ও নুরুল আমিনের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে আসামিরা বণিকপাড়ার পুকুরে নারীরা গোসল করার সময় পাড়ে বসে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির পাশাপাশি মোবাইলে স্নানের দৃশ্য ভিডিও করত।

২০০৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে বণিকপাড়া পুকুরপাড়ে গিয়ে দুর্গাপূজা না করার জন্য হুমকি দেন। বিকেলে অমলেন্দু বণিক ও তার ছেলে রানাপ্রতাপ পূজার বাজার করে ফেরার পথে তাদের রিকশা আটকে গালিগালাজ করে। ওই রাতেই আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে দুর্গাপূজা কমিটির সভাপতি ডাক্তার অরুণ ধরের বাড়ির বারান্দা রাখা পূজার জন্য বানানো দুর্গা, লক্ষ্মী-স্বরস্বতীসহ একাধিক প্রতিমা ভাঙচুর করে।

অমলেন্দু বণিকের দায়ের করা মামলা সিআইডি তদন্ত করে ২০০৯ সালের ৩০ জুলাই দণ্ডবিধির ২৯৫, ২৯৫ (ক) ও ৩৪ ধারায় আদালতে সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর রাষ্ট্রপক্ষে ছয়জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের প্রথম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসামিদের সবাইকে খালাস দিয়ে রায় দেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ জজ আদালতে আপিল দায়ের করে। ২০১৬ সালে অমলেন্দু বণিক মারা যান। তার ভাষ্যে যেহেতু ছেলে রানাপ্রতাপ মামলার এজাহার লিখেছিলেন, আদালতের নির্দেশে তিনি বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন।

আপিল আদালত ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য পর্যালোচনা করে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচজনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। দুই আসামিকে খালাস দিয়ে নিম্ন আদালতের দেওয়া রায় বহাল রাখেন প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রবিউল আউয়াল।

দণ্ডিতরা হলেন— নুরুল আমিন, বেদার মিয়া, কামাল উদ্দিন, নেজাম উদ্দিন ও জামাল উদ্দিন। এদের মধ্যে নেজাম উদ্দিন ও জামাল উদ্দিনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলো। বাকি তিনজন এখনো পলাতক।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

দুর্গাপূজা দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুর প্রতিমা ভাঙচুর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর