Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ইসলামবিদ্বেষী’ বক্তব্য দিয়ে তোপের মুখে মোদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২২ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৩৬

ভারতের রাজস্থানে নির্বাচনি জনসভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া বক্তব্যকে ‘ইসলামবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করছেন বিরোধীরা। এ বক্তব্যের কারণে মোদি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বিরোধীরা বলছেন, এর আগে কখনো কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় সম্প্রদায়কে নিয়ে এমন অবমাননাকর বক্তব্য দেননি।

রাজস্থানের ওই জনসভায় নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে বিরোধীরা জিতলে তারা জনগণের সম্পদ ‘অনুপ্রবেশকারী’দের মধ্যে বিতরণ করবে। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, ভারতের মুসলিম জনগোষ্ঠীকে নিয়ে মোদির দেওয়া এ বক্তব্য চরম বিদ্বেষমূলক।

বিজ্ঞাপন

 রোববার (২১ এপ্রিল) নির্বাচনি জনসভায় মোদি বলেন, এর আগে কংগ্রেস সরকারে ছিল। তারা বলেছিল, দেশের সম্পত্তিতে অগ্রাধিকার মুসলিমদের। তাহলে তারা ক্ষমতায় এলে তাহলে সব সম্পত্তি কাদের মধ্যে বিতরণ করবে? তারা বিতরণ করবে তাদের মধ্যে যাদের সন্তানের সংখ্যা বেশি। অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে বিতরণ করবে। আপনাদের মেহনত করে উপার্জন করা অর্থ অনুপ্রবেশকারীদের বিতরণ করবে, আপনারা এটা মেনে নেবেন?

মোদি আরও বলেন, তাদের (কংগ্রেস) নির্বাচনি ইশতেহারে বলা হয়েছে, তারা ক্ষমতায় এলে আমাদের দেশের মা-বোনদের কাছে যে সোনা আছে তার হিসাব নেবে। তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তারপর সেগুলো নিয়ে পুনরায় বিতরণ করবে। আর সেগুলোকে তাদের মধ্যেই বিতরণ করবে, মনোমোহন সিংয়ের সরকার যাদের সম্পর্কে বলেছিল সম্পত্তিতে অগ্রাধিকার রয়েছে, সেই মুসলিমদের মধ্যে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ভারতের জাতীয় লোকসভা নির্বাচন শুরু হয়েছে গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল)। এর তৃতীয় দিনেই জনসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদি এমন মন্তব্য করলেন। তবে কংগ্রেসের বক্তব্য, মোদি তাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন, তেমন কিছুই তাদের পরিকল্পনায় নেই। মোদি বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্যই এমন বক্তব্য দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

জনসভায় দেওয়া বক্তব্যে মোদি মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। ভারতের মুসলমান জনগোষ্ঠীদের বিরুদ্ধে একটি গৎবাঁধা অভিযোগ, তারা অনেক সন্তানের জন্ম দেয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দাবি বিকৃত এবং নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে এমন দাবি করা হয়।

কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খার্গে তার দলের ইশতেহারে পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন, ভারতের ইতিহাসে কোনো প্রধানমন্ত্রী তাদের পদমর্যাদাকে মোদির মতো এতটা খাটো করেননি।

অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদ-উল-মুসলিমিনের সভাপতি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, মোদি মুসলমানদের অনুপ্রবেশকারী এবং অনেক সন্তান গ্রহণকারী বলছে। ২০০২ সাল থেকে, মুসলিমদের অপব্যবহার করা এবং ভোট পাওয়াটাই হলো একমাত্র ‘মোদি গ্যারান্টি’।

মোদির বক্তব্যকে ‘বিদ্বেষ ও বিভাজনমূলক’ বলে অভিহিত করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য সাকেত গোখলে। তিনি এই বক্তব্য দেওয়ার জন্য মোদির বিরুদ্ধে নির্বাচনি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করতে আহ্বান জানিয়েছেন।

নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিরুদ্ধে মুসলিমবিদ্বেষের অনেক অভিযোগ রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপির শাসনামলে ভারতের মুসলমানরা আক্রমণ ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এবং তারা ‘দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের’ মতো বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। যদিও বিজেপি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

প্রসঙ্গত, ভারতে সাত ধাপের লোকসভা তথা জাতীয় নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ১৯ এপ্রিল। আগামী ৪ জুন এ ধাপের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

সারাবাংলা/ইআ/টিআর

নির্বাচনি জনসভা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমালোচনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর