‘ক্যাসিনো কাণ্ডে গ্রেফতার’ সেলিম প্রধানের মনোনয়ন বাতিল
২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:০৬
নারায়ণগঞ্জ: রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ক্যাসিনো কাণ্ডে গ্রেফতার সেলিম প্রধানের মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠানে তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
মনোনয়ন বাতিল বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ জানান, সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে দুদকের এক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাভোগের অভিযোগ করেছে অন্য প্রার্থীরা। এ বিষয়ে তার আইনজীবী সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। ফলে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সেলিম প্রধানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
সেলিম প্রধানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘মনোনয়ন বাতিল প্রসঙ্গে আমরা হাইকোর্টে আপিল করব। আশা করি হাইকোর্টে মনোনয়ন ফিরে পাব।’
নির্বাচনে অংশ নেওয়া আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিবুর রহমানের আইনজীবী বলেন, ‘সেলিম প্রধান একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। আমরা আশা করি, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসারের আদেশ বহাল থাকবে।’
তিনি জানান, মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চ বিগত ২৭/১১/২০১৮ খ্রি. তারিখে একটি কমন আদেশ দেন। ওই আদেশে হাইকোর্ট বিভাগ বলেছেন যে, দুর্নীতির মামলায় দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির জামিন বা সাজা আপিলে স্থগিত থাকলেও তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, যদি না তার সাজা উপযুক্ত আদালত কর্তৃক বাতিল না হয়।
তিনি আরও জানান, আদালত আরও বলেছেন যে, আপিল বিচারাধীন থাকা মানে দণ্ডিত ব্যক্তি নির্দোষ নয়। একমাত্র উপযুক্ত আদালত কর্তৃক সাজা বাতিল হলে দণ্ডিত ব্যক্তি নির্দোষ হবেন। দণ্ড বাতিল না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২১ মে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাইল্যান্ডগামী বিমান থেকে নামিয়ে এনে সেলিম প্রধানকে আটক করেছিল র্যাব। এর পর তার বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করা হয়।
তখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে অনলাইন ক্যাসিনো বা অনলাইন জুয়ার মূল হোতা। তিনি প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। সেইসঙ্গে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে ঢাকার গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি মামলা হয়। এসব মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তবে সেলিম প্রধান জামিনে রয়েছেন।
একইসঙ্গে দুদকের এক মামলায় ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল রায় দিয়েছেন আদালত। তাতে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের দুই ধারায় সেলিম প্রধানকে চার বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। যার সাজাভোগ শেষ হয়েছে। সেইসঙ্গে এ সাজার বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেছেন, যা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম