Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জাহাজেই ফিরবেন ২৩ নাবিক, চলছে কয়লা খালাস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৩ এপ্রিল ২০২৪ ২২:৪৯

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া ২৩ নাবিকের সবাই এমভি আবদুল্লাহ জাহাজেই দেশে ফিরবেন বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। জাহাজটির মালিকপক্ষ জানিয়েছে, দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে পণ্য খালাসের পর আমদানি পণ্য বোঝাই করে জাহাজটি দেশের উদ্দেশে রওনা দেবে। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছবে, তবে এখনও তারিখ নির্ধারণ হয়নি।

৫৫ হাজার মেট্রিকটন কয়লা বোঝাই এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি রোববার (২১ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে চারটায় আল হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছে। সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরের জেটিতে ভিড়েছে জাহাজটি। তখন সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং জাহাজ পরিচালনাকারী এসআর শিপিংয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

জাহাজের মালিকপক্ষ চট্টগ্রামের কবির স্টিল রি-রোলিং মিলস (কেএসআরএম) গ্রুপের মুখপাত্র মিজানুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) সকাল থেকে জাহাজের কার্গো খালাস শুরু হয়েছে। খালাসের পর আবার নতুন কার্গো সেখানে বোঝাই হবে, যেগুলো নিয়ে জাহাজটি দেশে ফিরবে। সব মিলিয়ে এক সপ্তাহের মতো আল হামরিয়া বন্দরে জাহাজটিকে থাকতে হবে।’

জাহাজের ২৩ নাবিকের মধ্যে ২১ জন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে করে এবং দুজন দুবাই বিমানবন্দরে থেকে বিমানে দেশে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছার পর দুই নাবিক তাদের মত পাল্টেছেন। তারাও জাহাজে দেশে ফেরার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।

মিজানুল ইসলাম বলেন, ’২৩ নাবিকই জাহাজে করে ফিরবেন। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। মে মাসের মাঝামাঝি জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। আল হামরিয়া বন্দরের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর রওনা দেওয়ার শিডিউল চূড়ান্ত হলে তখন কোনোদিন চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছবে সেটি বলা যাবে।’

বিজ্ঞাপন

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি গত ১২ মার্চ বেলা ১২টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। ওই জাহাজের ২৩ নাবিককে জিম্মি করা হয়। জাহাজটি কয়লা নিয়ে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারামিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল।

নাবিকেরা হলেন- জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ এবং ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. নুরুদ্দিন ও মো. সালেহ আহমদ।

মুক্তিপণ পরিশোধের পর ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ৮ মিনিটে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ থেকে নেমে যায় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জলদস্যুরা নেমে যাওয়ার পরই জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারামিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রিত উপকূল থেকে সোমালিয়ার সীমানা পার করে দেয়।

এর আগে, ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর আরবসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল কেএসআরএম গ্রুপের এস আর শিপিং লিমিটেডের আরেকটি জাহাজ ‘এমভি জাহান মণি’। ওই জাহাজের ২৫ বাংলাদেশি নাবিকের পাশাপাশি এক ক্যাপ্টেনের স্ত্রীসহ ২৬ জনকে ১০০ দিন জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। সরকারি উদ্যোগসহ নানা প্রক্রিয়ায় ২০১১ সালের ১৪ মার্চ জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়। ১৫ মার্চ তারা বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তবে এবার মাত্র ৩৩ দিনেই এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটিকে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত করা হয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

এমভি আবদুল্লাহ জলদস্যু টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর