সাহিত্যের আড়ালে শিশু পর্নোগ্রাফি, ৩-৪ ভিডিওতে পান হাজার ডলার
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৫৭ | আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৪৭
ঢাকা: শিশুসাহিত্যিক টিপু কিবরিয়া। প্রকৃত নাম টিআই এম ফখরুজ্জামান। এই টিপু সাহিত্যিকের আড়ালে দিনে দিনে হয়ে উঠেছেন ভয়ংকর অপরাধী। অর্থের জন্য আন্তর্জাতিক শিশু পর্নগ্রাফি অপরাধী চক্রে জড়িয়েছেন তিনি। তাকে গ্রেফতারের পর ইতালি, অস্ট্রেলিয়া ও জার্মানিসহ অনেক দেশের গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করা ২৫ হাজার শিশু পর্নোগ্রাফির ছবি ও এক হাজার ভিডিও পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী শিশুরা সবাই ছিন্নমূল পথশিশু। চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।
গতকাল (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর খিলগাঁও থেকে চক্রের বাংলাদেশি হোতা টিপু কিবরিয়া ও সহযোগী কামরুল ইসলাম ওরফে সাগরকে গ্রেফতার করে সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের টিম। তাদের বাসা থেকে একজন শিশুসহ ভিডিও ধারণ করা ক্যামেরা, পিসি, ক্লাউড স্টোরেজ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বুধবার (২৪ এপ্রিল) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিটিটিস। এতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশে বসে তিনি আন্তর্জাতিক শিশু পর্নোগ্রাফি অপরাধী চক্রের সঙ্গে যুক্ত। ভয়ংকর এ অপরাধে জড়িত থাকার কারণে অনেক দেশে তিনি শিশু পর্নোগ্রাফির অপরাধী হিসেবে তালিকাভুক্ত। ২০১৪ সালের জুনে শিশুদের পর্নোগ্রাফি তৈরি ও পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইন্টারপোলের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাকে প্রথম গ্রেফতার করে। ওই ঘটনায় ছয় বছর কারাগারে থাকার পর ২০২১ সালে কারামুক্ত হন টিপু। এরপরও স্বভাব বদলায়নি তার। নজরদারিতে থাকা টিপুকে একই অপরাধে ফের গ্রেফতার করল সিটিটিসি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার গুলিস্তান, রমনাপার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ছিন্নমূল পথশিশুদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে পর্নোগ্রাফির কাজে যুক্ত করতেন তিনি। পরে তাদের অশ্লীল এবং গোপনাঙ্গের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে পাঠাতেন। এ ছাড়া, তাদের চাহিদা মতো বন-জঙ্গলে নিয়েও ছিন্নমূল পথশিশুদের পর্নোগ্রাফির ভিডিও ধারণ করে পাঠিয়ে দিতেন। পরে এসব ভিডিও বিভিন্ন পর্নোগ্রাফি সাইটে আপলোড করতেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘মাত্র পাঁচশত থেকে হাজার টাকার প্রলোভনে টিপু এসব পথশিশুদের নিয়ে আসতেন। তার চক্রে কামরুল ছাড়াও অনেক সহযোগী রয়েছে। চক্রের সদস্যরাও অর্থের লেনদেন করতেন ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন ও কিছু এমএফএস’র মাধ্যমে। ৩–৪টি ছোট ভিডিও পাঠালেই তিনি পেতেন হাজার ডলার। দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে তার এজেন্ট। এরকম বেশ কয়েকজন এজেন্টকে আমরা শনাক্ত করেছি। পাশাপাশি ২৫–৩০ জনের মতো ভুক্তভোগী শিশুকে শনাক্ত করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা সবাই ছেলে। তাদের সংখ্যা অনেক।’
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম