একদিকে পেট, অন্যদিকে সূর্যের তেজ— অসহায় হতদরিদ্ররা
২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:১৭
কক্সবাজার: প্রচণ্ড গরমে অসহ্য জনজীবন। এতে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন রিকশাচালক-দিনমজুরসহ হতদরিদ্ররা। একদিকে পেটের চিন্তা, অন্যদিকে প্রচণ্ড গরম। মনের জোরে পরিবারের জন্য ঘর থেকে বের হলেও হার মানতে হচ্ছে সূর্যের তাপে। বেশিক্ষণ চলছে না তাদের ক্লান্ত শরীর। ফলে তীব্র তাপপ্রবাহে অসহায় দিন কাটাচ্ছেন হতদরিদ্ররা।
এদিকে আবহাওয়া অফিসও বলছে, শিগগিরই সূর্যের তেজ কমছে না।
কক্সবাজার শহরে গাছের নিচে ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন রিকশাচালক জাফর আলম। তিনি বলেন, ‘অসহ্য গরমে একটু জিরিয়ে নিচ্ছি, একটা ভাড়া মারতে পারছি না আরেকটা মারার শক্তি নাই। এদিকে রোজগার করতে না পারলে পরিবার খেতে পারবে না। সন্ধ্যায় ঘরে চাল ছাড়া ফিরতে পারব না। বউ-বাচ্চা না খেয়ে থাকবে।’
দিনমজুর আব্দুল কাদের প্রকাশ ভান্ডারী বলেন, ‘চামড়া পোড়া গরম পড়ছে। এরপরেও পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে। কাজও তেমন মিলছে না। বেশিক্ষণও কাজ করতে পারছি না। রোদের কারণে মাথা ঝিমঝিম করে। গরম সহ্য করতে না পেরে অনেকে অর্ধেক কাজ থেকে চলে আসে। জানি না সামনের দিনগুলো কেমন যায়!’
ফুটপাতে শরবত খাওয়া এক টমটম চালকের কাছে জানতে চাওয়া হয় এই শবরত স্বাস্থ্যসম্মত কি না? উত্তরে তিনি বলেন, ‘কিছুই করার নেই, খুবই গরম লাগছে। এই বরফের শরবত খেয়ে একটু ঠান্ডা হচ্ছি। আমরা তো আর দামি পানীয় খেতে পারব না, তাই কম দামের এই ঠান্ডা খেয়ে বুকটা শীতল করছি’।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এই গরমে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সতর্ক না হলে ঘটতে পারে হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া-জন্ডিসসহ নানা রোগ। বাড়তি বিশুদ্ধ পানি পানসহ নিরাপদে থাকা পরার্মশ দিচ্ছেন তারা।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. রিপন চৌধুরী বলেন, ‘গরমে হিট স্ট্রোকের প্রবণতা রয়েছে। এই ঝুঁকিতে বেশি রয়েছেন দিনমজুর বা খেটেখাওয়া লোকজন। তাদের একটানা কাজ করা কোনোভাবেই উচিত নয়। কাজের ফাঁকে জিরিয়ে নিতে হবে। অনেককে দেখা যায়, ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর শরবত, মসলা বা তেলযুক্ত খাবার খেতে, যা ক্ষতিকর। এতে ডায়রিয়া-জন্ডিসসহ নানা রোগবালাইয়ের আশঙ্কা রয়েছে। পানি ও খাবারের ব্যাপারে সর্তক থাকতে হবে। ছাতা ও বিশুদ্ধ পানি সঙ্গে রাখতে হবে।’
এদিকে আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘বুধবার (২৪ এপ্রিল) কক্সবাজারে সর্বোচ্চ ৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এই তাপপ্রবাহ আরও কিছু দিন থাকবে। আগামী ৫-৭ দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও নেই। এছাড়া জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে গরম বেশি অনুভব হচ্ছে।’
সারাবাংলা/এমও