Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বরাদ্দ মেলেনি ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, আটকে আছে ‘জামদানি ভিলেজ’

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:২৯

কারিগরের নিপুণ হাতে তৈরি হচ্ছে জামদানি শাড়ি। ছবি: উইকিমিডিয়া কমন্স

ঢাকা: জামদানি শাড়ি। বাংলার ঐতিহ্য, বাংলার গর্ব। দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বজুড়ে এর সুনাম। এরই মধ্যে বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক তথা জিআই পণ্যের স্বীকৃতিও পেয়েছে জামদানি শাড়ি। কালের পরিক্রমায় এই জামদানি শাড়িকে কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সেটি নিশ্চিত করতেই ‘জামদানি ভিলেজ’ স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছিল সরকার। অনুমোদন পেয়েছে সে প্রকল্প। জিও তথা সরকারি আদেশের পর প্রশাসনিক অনুমোদনও হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে শুরু করা যাচ্ছে না সেই প্রকল্পের কাজ।

বিজ্ঞাপন

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে এই প্রকল্পের জন্য চাওয়া হয়েছে এক কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সেটিই এখনো অনুমোদন প্রক্রিয়ার মধ্যে আটকে থাকায় আটকে আছে ‘জামদানি ভিলেজে’র কাজও। অথচ এটি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় অগ্রাধিকারভিত্তিক একটি প্রকল্পটি।

গত মার্চে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের সভাকক্ষে জামদানি ভিলেজ প্রকল্পটি নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় এই প্রকল্পের বিভিন্ন দিক উঠে আসে।

জামদানি শিল্পের উন্নয়ন ও গবেষণা জোরদার করতে ‘জামদানি ভিলেজ স্থাপন’ প্রকল্পটি হাতে নেয় সরকার। গবেষণার পাশাপাশি উৎপাদিত জামদানি পণ্যের বাজারজাতকরণ, সরবরাহ ব্যবস্থাপনা ও ক্রেতাদের জন্য উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করাও এই প্রকল্পের লক্ষ্য। একই সঙ্গে পরিবর্তিত বাজারে ভোক্তা চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নতুন নতুন নকশা উদ্ভাবনও প্রকল্পটি হাতে নেওয়ার অন্যতম কারণ।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় ৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। গত বছরের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়। পিআইসি সভা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ওই সময়কার পরিকল্পনামন্ত্রী প্রকল্পটি অনুমোদন দেন। পরিকল্পনা কমিশন একই মাসে এটি নিয়ে জিও জারি করে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের পর ১১ অক্টোবর প্রশাসনিক অনুমোদন পায় প্রকল্পটি।

পিআইসি সভায় প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রকল্পের অনুকূলে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপিতে (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) এক কোটি ৮৫ লাখ টাকা নতুন প্রকল্পের থোক থেকে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য একটি প্রস্তাব বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে গত বছরের ৩ ডিসেম্বরে পরিকল্পনা কমিশন থেকে থোক বরাদ্দ প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য কার্যক্রম বিভাগে পাঠানো হয়। কার্যক্রম বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। তবে সেই বরাদ্দ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

সভায় তাঁত বোর্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন বিভাগের সহকারী প্রধান বলেন, প্রকল্পটির সার্বিক বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর অনুকূলে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপিতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা হয়নি। তাই এক কোটি ৮৫ লাখ টাকা নতুন প্রকল্পের থোক থেকে বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের আরএডিপিতেও ওই এক কোটি ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই প্রস্তাবিত বরাদ্দ অনুমোদন হবে এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অর্থছাড়ের প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

সভায় পরিকল্পনা কমিশনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন বিভাগের সদস্য বলেন, প্রকল্পটি বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড তথা বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার প্রকল্প। তাই প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রম যথাসম্ভব দ্রুত শুরু করা প্রয়োজন। এর মধ্যে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যয়ের জন্য এক কোটি ৮৫ লাখ টাকা আরএডিপি থেকে বরাদ্দ পাওয়া যাবে।

অনুমোদিত ডিপিপিতে এই প্রকল্পের পূর্ত নির্মাণ কাজ বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের নিজস্ব প্রকৌশল শাখার মাধ্যমে শেষ করার সংস্থান রয়েছে। ফলে প্রকল্পের চলতি অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত ভূমি উন্নয়ন ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বানসহ যাবতীয় পূর্ত নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের প্রকৌশল শাখাকে প্রকল্প সাইট বুঝিয়ে দেওয়া যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন
পরিকল্পনা কমিশনের এই সদস্য।

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন প্রকল্পটি নিয়ে বলেন, এটি বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। এর বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে পূর্ত নির্মাণ কাজের সংশ্লিষ্ট সবকিছুসহ প্রকল্প সাইট তাঁত বোর্ডের প্রকৌশল শাখাকে বুঝিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি চলতি অর্থবছরের ব্যয়ের জন্য এক কোটি ৮৫ লাখ টাকা পাওয়া গেলে লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব হবে। এই অর্থ আরএডিপি থেকে বরাদ্দের প্রস্তাব অনুমোদন ও দ্রুত অর্থছাড়ের জন্য প্রকল্প পরিচালক এবং পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

জামদানি জামদানি ভিলেজ জামদানি শাড়ি জিআই পণ্য জিআই স্বীকৃতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর