Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শোষণকারী মালিক কি শুধু এক ইউনূস?– প্রশ্ন শ্রমিক নেতার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১ মে ২০২৪ ২৩:০৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশে শ্রমিক শোষণকারী মালিক শুধু ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন কি না– মহান মে দিবসের অনুষ্ঠানে এক শ্রমিক নেতা এমন প্রশ্ন তুলেছেন। শ্রমিকের অধিকার হরণকারী অন্য মালিকদের কেন আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে না?- এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি।

বুধবার (১ মে) বিকেলে নগরীর চেরাগি চত্বরে ‘মে দিবস উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম’ আয়োজিত সাংস্কৃতিক আয়োজনের আলোচনা সভায় শ্রমিক নেতা আবু তাহের এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামের নাভানা ব্যাটারিজ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা ও নির্বাচিত সিবিএ সভাপতি আবু তাহের বলেন, ‘দেশের শিল্প-কারখানার মালিকরা শ্রম আইন মানে না। তাদের শ্রম আইন না মানার জন্য বরং সরকার ও প্রশাসন সহযোগিতা করে। ফলে মালিকরা দেশের আইনকানুন, শ্রমিকের স্বার্থের আন্তর্জাতিক বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আসছেন।’

‘এর মধ্যেও একটি সুখবর হচ্ছে, শ্রমিকের মামলায় একজন মালিক, যিনি আবার নোবেল বিজয়ী, তার সাজা হয়েছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, দেশে শ্রমিক শোষণকারী মালিক কি শুধু ড. ইউনূস একজনই? নোবেল বিজয়ী হয়েও তিনি যদি সাজা পেতে পারেন, তাহলে অন্য মালিকরা ধরাছোঁয়ার বাইরে কেন? দেশের পুঁজিপতি সব মালিকই কোনো না কোনোভাবে শ্রমিকদের শোষণ করে চলেছেন। তাহলে সব মালিককে কেন আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাচ্ছে না?’

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা উদীচীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. চন্দন দাশ বলেন, ’২২ বছর আগে আমরা চট্টগ্রামের বেশকিছু প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক গণসংগঠন, যারা বিভিন্নভাবে শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সোচ্চার ছিলাম, তারা বিক্ষিপ্তভাবে না থেকে এক কাতারে এসেছিলাম। সেই থেকে আমরা মে দিবসের দিনে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচির মাধ্যমে একমঞ্চে এসে শ্রমিকের লড়াই-সংগ্রামে সংহতি জানিয়ে যাচ্ছি। ডিসি হিল বন্ধ থাকার কারণে আমরা সেখানে অনুষ্ঠান করতে পারছি না। আমরা ডিসি হিল খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

বোধন আবৃত্তি পরিষদের সহ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল আজম চৌধুরীর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম জেলা সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের সংগঠক ইমরান চৌধুরী।

আলোচনা সভার পর উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের শিল্পীদের গণসঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক আয়োজন শুরু হয়। পরিষদভুক্ত সংগঠন বোধন আবৃত্তি পরিষদের শিল্পীরা বৃন্দ ও দলীয় আবৃত্তিতে অংশ নেন। নৃত্যশিল্পী প্রমা অবন্তীর পরিচালনায় ওডিশি অ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্টের শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন। এ ছাড়া, গান-নাটক, কবিতাসহ আরও আয়োজনে অংশ নেন ফেইম স্কুল অব ডান্স ড্রামা অ্যান্ড মিউজিক, সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন ও চট্টগ্রাম চলচ্চিত্র ইনস্টিটিউটের সদস্যরা।

এ ছাড়া, রক্তকরবী, দেবাঞ্জলী সঙ্গীতালয়, একুশ মানবিকতা ও আবৃত্তিচর্চা কেন্দ্র, সুরাঙ্গন বিদ্যালয় ও রাগেশ্রী সঙ্গীত শিক্ষাকেন্দ্রের শিল্পীরা তাদের পরিবেশনা নিয়ে সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশ নেন।

এদিকে ‘মহান মে দিবস উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম’র ব্যানারে বুধবার সকালে নগরীর আমতল এলাকায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে ছয়টি সংগঠন। সেগুলো হলো- উদীচী চট্টগ্রামের একাংশ, আলোড়ন ড্যান্স একাডেমি, চট্টগ্রাম থিয়েটার, বোধন আবৃত্তি পরিষদের একাংশ, বিশ্বতান ও সৃজামী সাংস্কৃতিক অঙ্গন।

এ ছাড়া, সম্মিলিত মে দিবস উদযাপন পরিষদের ব্যানারে ১১টি সংগঠন বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সংগঠনগুলো হলো- সমাজ সমীক্ষা সংঘ, তারুণ্যের উচ্ছ্বাস, দৃষ্টি চট্টগ্রাম, অরিন্দম নাট্য সম্প্রদায়, সংগীত ভবন, উত্তরাধিকার, সংগীততীর্থ, উচ্চারক আবৃত্তি কুঞ্জ, নজরুল সংগীত শিল্পী সংস্থা, প্রাপন একাডেমি এবং স্কুল অব ওরিয়েন্টাল ডান্স।

মে দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা যুব ইউনিয়ন বিকেলে মিছিল-সমাবেশ করেছে। নগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে সংগঠনের জেলা সভাপতি শাহ আলমের সভাপতিত্বে ও অভিজিৎ বড়ুয়ার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন- জেলা সিপিবির সভাপতি অশোক সাহা, যুব ইউনিয়নের নেতা প্রীতম চৌধুরী, জাবেদ চৌধুরী, রুপন কান্তি ধর, রাশিদুল সামির, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ইমরান চৌধুরী।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

ড. মুহাম্মদ ইউনূস মহান মে দিবস শ্রমিক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর