Sunday 27 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কুবিতে এক টেবিলে ১৮ ভর্তি পরীক্ষার্থী!

কুবি করেসপন্ডেন্ট
৩ মে ২০২৪ ১৮:৪৮ | আপডেট: ৩ মে ২০২৪ ২০:৪৩

কুবি: আজ শুক্রবার (৩ মে) গুচ্ছ পদ্ধতিতে দেশের ২৪টি সাধারণ, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এসময় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে বেশ কয়েকটি বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরি কক্ষে পরীক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে বসে পরীক্ষা দিতে দেখা যায়। তবে শিক্ষক সমিতির নেতাদের অভিযোগ, উপাচার্য ইচ্ছাকৃতভাবে অনভিজ্ঞ এবং সর্বকনিষ্ঠ শিক্ষকদের এই দায়িত্ব দিয়ে ভর্তি পরীক্ষার মতো একটি আয়োজনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের সব সেমিনার লাইব্রেরিতেই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এসময় সেখানে একেক টেবিলে ১৮ থেকে ২০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেছেন। এছাড়াও প্রশাসনিক ভবনের হল রুমেও এবার প্রথমবারের মতো ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি শিক্ষাবর্ষে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায়ও এভাবে সেমিনার লাইব্রেরিগুলোতে আসন বিন্যাস করা হয়।

সেমিনার লাইব্রেরিতে পরীক্ষা দেওয়া এক শিক্ষার্থী জানান, সেমিনার কক্ষে তাদের কোন সিট প্ল্যান বসানো হয়নি। শিক্ষকরা যাকে যেখানে বসতে বলেছেন তারা সেখানেই বসে পরীক্ষা দিয়েছেন। একসাথে এক টেবিলে এতজন গাদাগাদি করে পরীক্ষা দেওয়াতে মনোযোগেও সমস্যা হচ্ছিলো বারবার। আরও বিভিন্ন জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা দিলেও এভাবে বসে পরীক্ষা দেওয়ার অভিজ্ঞতা এখানেই প্রথম।

এ বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ৫ম তলার হল পরিদর্শক ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ককে প্রশ্ন করতে বলেন।

‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন বলেন, “সিট প্ল্যানের জন্য ‘কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটি’ নামে আলাদা একটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটিই আসন বিন্যাসের ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে।”

বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. প্রদীপ দেবনাথ বলেন, ‘আমার অনুষদের প্রতিটি বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরিতেই পরীক্ষা হয়েছে।’

এভাবে এক টেবিলে ১৮-২০ জন পরীক্ষা দিলে সেটার স্বচ্ছতা কতটুকু থাকবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটিই বলতে পারবে।’

শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘পূর্বে যতগুলো ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে সেগুলো আমরা খুব ইমেজের সাথে শেষ করেছি। কিন্তু এই উপাচার্য এবার আসন বণ্টনের যে কমিটি করেছেন সেখানে তিনি তার আস্থাভাজন একেবারে অনভিজ্ঞ, জুনিয়র শিক্ষকদেরকে তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন। যার ফলে এরা ল্যাব, সেমিনারের মতো রুমগুলোতেও এবার পরীক্ষা নিয়েছে। যেখানে ৫ জন বসতে পারবে সেখানে ১০জনকে বসিয়েছে। এটা এদের অনভিজ্ঞতার ফল। আর এই দায়ভার সম্পূর্ণ উপাচার্যের। তিনি ভর্তি পরীক্ষার মতো একটি আয়োজনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছেন। দেশবাসীর কাছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে হাস্যকর করে তুলছেন।’

কেন্দ্র ব্যবস্থা কমিটির সদস্য সচিব আবু ওবায়দা রাহিদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক ও লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘এবার আমরা চেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সর্বোচ্চ সংখ্যক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে। সেজন্যই সেমিনার লাইব্রেরিগুলোতেও পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই অল্প সংখ্যক পরীক্ষার্থীর জন্য আরেকটা কেন্দ্র ব্যবস্থা করা কঠিন ছিল।’

এক টেবিলে ১৮ থেকে ২০ জন একসাথে পরীক্ষা দিলে সেখানে স্বচ্ছতা থাকবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেখানে আমাদের শিক্ষকেরা দায়িত্বে ছিলেন। তারা সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেছেন। এখন যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে পরবর্তীতে এভাবে সেমিনার লাইব্রেরিগুলোতে আমরা আর পরীক্ষা নিব না।’

প্রসঙ্গত, গুচ্ছভুক্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে এবার ৪ হাজার ২৯২ জন পরীক্ষার্থীর আসনের ব্যবস্থা করা হয়। এরমধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুমিল্লা টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার এই দু’টি কেন্দ্রে সকাল ১১টা দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

সারাবাংলা/এমও

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর