Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুন্দরবনের আগুন: কাজ করছে ৫ ইউনিট, পানি নিয়ে সংকট

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৫ মে ২০২৪ ১০:১৫

রাতভর জ্বলেছে সুন্দরবনের আগুন। রোববার সকালে সেখানে কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের ৫ ইউনিট। ছবি: সারাবাংলা

বাগেরহাট: পূর্ব সুন্দরবনের চাদঁপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া বনের গহীনে আগুন নেভাতে সকাল থেকে আবার কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস। বাগেরহাটের বিভিন্ন ফায়ার স্টেশনের পাঁচটি ইউনিট কাজ করছে। তবে একদিকে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বহন করতে সমস্যা হচ্ছে। অন্যদিকে পানি সংকটের কারণেও আগুন নেভাতে জটিলতার মুখে পড়তে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসকে।

শনিবার (৪ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ির কাছের এলাকায় বনে আগুন লাগে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সেখানে পৌঁছালেও কাজ শুরু করতে পারেনি। পরে রোববার (৫ মে) সকাল ৭টা থেকে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ শুরু করেছে। তবে সেখানে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে ফায়ার কর্মীদের।

বিজ্ঞাপন

রোববার সকালে ফায়ার সার্ভিস খুলনা বিভাগের উপপরিচালক মামুন মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাঁচটি ইউনিট নিয়ে সকাল ৭টায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়েছে। এটা আমাদের জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং ফায়ার। আমরা সরাসরি ঘটনাস্থলে ফায়ার ইকুইপমেন্টস নিতে পারছি না। একটা জায়গা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো নেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ভ্যানে করে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি ইকুইপমেন্টসগুলো নেওয়া হয়েছে। এখন নৌকা থেকে আমরা আগুন নেভাতে কাজ করছি।’

আগুন লাগার জায়গাটি দুর্গম হওয়ায় এবং কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। ছবি: সারাবাংলা

মামুন মাহমুদ আরও বলেন, ‘আগুন অনেক বড় এলাকাজুড়ে লেগেছে। সেখানে অক্সিজেনের সমস্যা আছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা, পানির সংকট। এখন আমরা নদীর পানি ব্যবহার করছি। কিন্তু ভাটা শুরু হলে পানি নেমে গেলে তখন আবার পানি পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। আপাতত আমরা দুই ঘণ্টা কাজ করতে পারব আশা করছি। ভাটা শুরু হলে পানি নেমে গেলে জেলা প্রশাসনসহ বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আমরা কীভাবে কাজ করব।’

বিজ্ঞাপন

মোংলা ফায়ার স্টেশনের ডিউটি অফিসার মামুন সারাবাংলাকে বলেন, ঘটনাস্থল দুর্গম। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে কাজ শুরুই করা যায়নি। আজ ভোরে আমাদের ইউনিট সেখানে চলে গেছে। আশপাশের অন্য ইউনিটগুলোও রয়েছে। সবাই কাজ করছে।

এর আগে শনিবার রাতে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী নুরুল করিম সারাবাংলাকে বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে দমকল বাহিনী নিয়ে আমরা ছুটে যাই। প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণে পানির উৎস খুঁজি। কিন্তু কাছাকাছি কোনো পানি পাওয়া যায়নি। অনেক দূরে ভোলা নদী থেকে পানি এনে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এরই মধ্যে সন্ধ্যা নেমে যায়। তাই আগুনের কাছে আর যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় এলাকাবাসী ও বনরক্ষীদের চেষ্টায় অল্প পানি সরবরাহ করে প্রাথমিকভাবে আগুন যেন ছড়াতে না পারে, সেই চেষ্টা করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক মামুন মাহমুদও আগুন ছড়ানো প্রতিরোধে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বললেন। তিনি বলেন, বনের ভেতরে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করা সম্ভব না। আগুন নেভাতে সময়ও লাগবে। সে কারণে আগুন যেন না ছড়াতে পারে, সেটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।

স্থানীয়রা জানান, আমোরবুনিয়া গ্রামের অবস্থান বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধারা বাজারের দক্ষিণপশ্চিমে। গ্রামের পশ্চিম পাশে ভোলা নদী। সেই নদী পার হলে সুন্দরবনের ওই এলাকা জিউধারা স্টেশনের আমোরবুনিয়া টহল ফাঁড়ির অধীন। সেখান থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূর থেকে শুরু করে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত আগুন ও ধোঁয়া দেখা গেছে।

স্থানয়িরা আরও বলছেন, ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগ ও স্থানীয়রা আগুন লাগার খবর পাওয়ার পর থেকেই সেখানে কাজ করার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু নদী দূরে থাকায় সেখানে পানি নিয়ে যথাযথভাবে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। পরে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস রাতে ফিরে যায়।

সারাবাংলা/টিআর

ফায়ার সার্ভিস বাগেরহাট সুন্দরবন সুন্দরবনে আগুন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর