অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে ১৪%
৫ মে ২০২৪ ২২:৩১
ঢাকা: চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর) গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় মোট রাজস্ব আহরণ প্রায় ১৪ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি জানান, চলতি অর্থবছর মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে চার লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা।
রোববার (৫ মে) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের বাজেট বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মোট এক লাখ ৮৬ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ হয়েছে। এটি বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৩৭ দশমিক ৩ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি।
মন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কর রাজস্ব (এনবিআর ও এনবিআর বহির্ভূত) আহরণের প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৩ শতাংশ এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) আহরণের প্রবৃদ্ধি ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এ সময়ে কর বহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) আহরণের পরিমাণ ২৪ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, দ্বিতীয় প্রান্তিকে এনবিআরের রাজস্ব আদায় হয়েছে এক লাখ ৬৫ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি এবং চলতি অর্থবছরের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৩৮ দশমিক ৫ শতাংশ।
মন্ত্রী জানান, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে মোট ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা (জিডিপির ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ)। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য বায় চার লাখ ৯৮ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা (জিডিপির ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ) এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ব্যয় দুই লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা (জিডিপির ৫ দশমিক ২২ শতাংশ)।
অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের সরকারি ব্যয় পরিস্থিতি তুলে ধরে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, অর্থবছরের ছয় মাস শেষে মোট ব্যয় হয়েছে এক লাখ ৯৪ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা (বাজেট বরাদ্দের ২৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ)। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য ব্যয় এক লাখ ৫৩ হাজার ৫৭ কোটি টাকা (বাজেট বরাদ্দের ৩০ দশমিক ৬৯ শতাংশ)। সার্বিকভাবে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় মোট ব্যয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। এ ছাড়া পরিচালনসহ অন্যান্য ব্যয় এক দশমিক ০৯ শতাংশ বেড়েছে এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ব্যয় বেড়েছে ২৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
বাজেট ঘাটতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই লাখ ৬১ হাজার ৭৯০ কোটি টাকার বাজেট ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা প্রাক্কলিত জিডিপির ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র থেকে জিডিপির ২ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে জিডিপির ৩ দশমিক ১০ শতাংশ সংস্থানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বাজেট ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে একই সময়ে বাজেট ঘাটতি ছিল ২০ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা।
মন্ত্রী আরও জানান, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ অপেক্ষা ঋণ পরিশোধের পরিমাণ তিন হাজার ২৮৭ কোটি টাকা বেশি হয়েছে এবং বৈদেশিক উৎস থেকে নিট (অনুদানসহ) ১০ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকার ঘাটতি অর্থায়ন করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর