জাপানি দুই মেয়ে নিয়ে শুনানি ১১ জুলাই
৯ মে ২০২৪ ১৯:১০
ঢাকা: জাপান থেকে আসা দুই মেয়ের জিম্মা (হেফাজত) নিয়ে শুনানি ১১ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ। ওইদিন বড় মেয়েকে নিয়ে জাপানে চলে যাওয়ায় মা ডা. এরিকো নাকানোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলার শুনানি হবে। তখন উপস্থিত থাকতে হবে এরিকো নাকানো ও ইমরান শরীফকে।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালতে এরিকোর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কেসি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও আইনজীবী শিশির মনির। ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আখতার ইমাম। সঙ্গে ছিলেন রেশাদ ইমাম।
২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানো ও বাংলাদেশি আমেরিকান নাগরিক শরীফ ইমরান জাপানি আইনানুসারে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিনজন সন্তান জন্ম নেয়। এরপর বনিবনা না হওয়ায় দুই মেয়েকে নিয়ে দেশে চলে আসেন ইমরান শরীফ। পরবর্তীতে ২০২১ সালে বাংলাদেশে এসে রিট করেন এরিকো।
তখন সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান শিশুদের জিম্মা চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের মামলা খারিজ করে রায় দেন।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে পরদিন ইমরান শরিফ আপিল করেন জেলা জজ আদালতে। ১২ জুলাই জজ আদালতেও ইমরান শরীফের আবেদন খারিজ করে দেন। তারপর তিনি হাইকোর্টে রিভিশন করেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সেই রিভিশন আংশিক মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে বড় মেয়ে মায়ের কাছে এবং ব্যতিক্রমি পরিস্থিতি বিবেচনায় মেজ মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বাবার কাছে থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়। সম্প্রতি রায়টি প্রকাশের পর উভয় পক্ষই লিভ টু আপিল করেন। ইমরান শরীফ বড় মেয়েকে চেয়ে এবং এরিকো মেজ মেয়েকে চেয়ে লিভ টু আপিল করেন।
ইমরানের আবেদনে একটি নিষেধাজ্ঞার আবেদন ছিল। যেখানে বলা হয়েছে, মেয়েকে যেন দেশের বাইরে না নেওয়া হয়। ৯ এপ্রিল আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থার আদেশ দেন।
ইমরান শরীফের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমামের দাবি, সন্তানদের দেশের বাইরে যেতে নিয়ে যেতে আদালতের স্থিতাবস্থা ছিল। তার পরও বড় মেয়েকে নিয়ে এরিকো চলে গেছেন। এই কারণে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।
তবে এরিকোর আইনজীবী মো. শিশির মনির জানান, ৯ এপ্রিল দুপুর একটায় আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন। এই আদেশ হওয়ার আগেই সকাল ১১টার দিকে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে তারা দেশত্যাগ করেন।
শিশির মনির বলেন, হাইকোর্টের রায়ের কোথাও বলেননি যে, বাবা ও মা সন্তানদের নিয়ে দেশত্যাগ করতে পারবেন না। এরপর দুই পক্ষের লিভ টু আপিল এবং ইমরান শরীফের আদালত অবমাননার আবেদন আজ শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ওঠে। আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১১ জুলাই দিন ধার্য করেছেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম