আত্মনির্ভরশীল হতে সমবায় ছড়িয়ে দেওয়ার তাগিদ
১০ মে ২০২৪ ১৬:১৬
দেশ ও দেশের মানুষকে আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তুলতে দেশব্যাপী সমবায় গঠনের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ধারণা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সমবায় ব্যবস্থায় জমির মালিকানা পরিবর্তন হবে না। ফসলকে তিন ভাগে ভাগ করা হবে। প্রতিটি ফসলের একটি অংশ মালিক, একটি অংশ কৃষকর আর একটি অংশ পাবে সমবায়। এভাবে সবাই মিলে আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। অন্যের ওপর নির্ভরতা কমাতে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় আনতে হবে।
শুক্রবার (১০ মে) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় চত্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে দড়িয়াকুল একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। তার সঙ্গে জাতির পিতার কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাও ছিলেন।
শেখ হাসিনা নিজে দাড়িয়াকুল গ্রাম উন্নয়ন সমিতির উপদেষ্টা। তার দেওয়া ৯ দশমিক শূন্য পাঁচ একর জমিতে গড়ে উঠেছে এই সমবায় সমিতি। অনুষ্ঠানে সমবায় সমিতির কার্যক্রমকে পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে আত্মনির্ভরশীল করতে সারা বাংলাদেশে সমবায় গঠনের ধারণা ছড়িয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে সরকার বহুমাত্রিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে জানিয়ে অনুষ্ঠানে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বহুমাত্রিক কর্মসূচি হাতে নিয়ে প্রত্যেক মানুষকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমার বাড়ি, আমার খামার, জনগণকে আর্থিক অনুদান প্রদান, সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প, গ্যারান্টি ছাড়া ঋণ প্রদান, সমাজ থেকে দারিদ্র্য বিমোচন করার জন্য যুবকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান— এ রকম বহু কর্মসূচি সরকার হাতে নিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। কর্মসূচিগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশে কেউ গরীব থাকবে না।
ক্ষুদ্র সঞ্চয় নিশ্চিত করতে এবং এভাবে দেশের উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য সারা দেশে সমবায় সমিতি গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি এলাকায় সমবায় সমিতি গঠন করে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে আওয়ামী লীগ নেতাদের আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, সবাই যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, সে জন্য আমরা কাজ করছি।
সরকার দেশবাসীর ভবিষ্যত নিরাপদ করতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা শুধু বর্তমানের জন্য নয়, ভবিষ্যতের জন্যও কাজ করছি। সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুবিধাভোগীদের ভবিষ্যত জীবন সুরক্ষিত করবে।
দলের নেতাকর্মীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বর্ষাকালে দলের প্রত্যেক সদস্যকে অন্তত তিনটি করে গাছের চারা লাগানোর আহ্বান জানান।
পরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় চত্বরে দরিদ্রদের মধ্যে রিপার মেশিন, সার, ল্যাপটপ, ১০টি সাইকেল, ১০টি রিকশা ভ্যান, ৩০টি সেলাই মেশিন এবং ৩৮ জনকে ৪০ হাজার টাকার আর্থিক অনুদান, ১০ জোড়া কবুতর ও ৩৮ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম। সুবিধাভোগীরা তাদের সরঞ্জাম ও আর্থিক অনুদান পাওয়ার অনুভূতি জানান অনুষ্ঠানে।
এর আগে শুক্রবার সকালে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছানোর পরপরই ছোট বোন শেখ রেহানা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। পরিবারের সদস্যদের যারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহিদ হয়েছেন, তাদের জন্যও তিনি প্রার্থনা করেন। বাসস।
সারাবাংলা/টিআর
টুঙ্গীপাড়া দাড়িয়াকুল গ্রাম উন্নয়ন সমিতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর উপহার শেখ হাসিনা সমবায় সমিতি