ধর্ষণ চেষ্টা ও হামলার মামলা নিচ্ছেন না ওসি!
১১ মে ২০২৪ ১৮:২৪
বাগেরহাট: দুই সন্তানের জননী এক নারীকে ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কামড়িয়ে রক্তাক্ত করা হয়। পরে ওই নারীর ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এলে পালিয়ে যায় ধর্ষণের চেষ্টাকারী জলিল মাতুব্বর নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাটি বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার সিগনাল টাওয়ার এলাকায়।
এ ঘটনায় থানায় কয়েক দফায় থানায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে গেলেও মামলা নেয়নি মোংলা থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম। এদিকে মামলা না নেওয়ার অভিযোগে নিরুপায় হয়ে গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারীর খালা নাছিমা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, গত ৯ মার্চ সকালে তার বোনের মেয়ে দুই সন্তানের জননীর (২৮) স্বামী ঘরে না থাকার সুযোগে তার ঘরে প্রবেশ করে স্থানীয় মৃত কাদের মাতুব্বরের ছেলে জলিল মাতুব্বর। এ সময় তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড় দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে জলিল মাতুব্বর পালিয়ে যায়। পরে তার বোনের মেয়েকে ওইদিন রাতে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনা স্থানীয় লোকজনকে জানালে আরও ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠেন জলিল মাতুব্বর। ভুক্তভোগী নারীর পরিবারের আরও ছয়জনকে মারপিট ও ঘরে ভাঙচুর চালায় জলির মাতব্বর। পরে জলিল মাতুব্বরকে আসামি করে মোংলা থানায় ধর্ষণ মামলা করতে যান ভুক্তভোগী নারী। এ মামলায় ব্যবস্থা নিতে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়রের তালুকদার আব্দুল খালেকের লিখিত সুপারিশও রয়েছে।
থানায় এজাহার নিয়ে যাওয়া ধর্ষণ চেষ্টার শিকার ওই নারীর খালা নাছিমা বেগমকে ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম থানা থেকে বরে করে দেয় বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন তিনি। এরপর মামলা করতে কয়েক দফা থানায় গেলেও ওসি নানা অজুহাত দেখিয়ে মামলা আর নেননি। মামলা করতে থানায় যাওয়ায় এবার নাছিমা বেগমসহ ছেলে শিমুল, তার স্ত্রী হাফিজা, ও নাতি ওমরের ওপর হামলা চালায় জলিল মাতুব্বরগং। হামলার ঘটনায়ও এজাহার নিয়ে গেলে মামলা নেয়নি পুলিশ।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্ষণের বিষয়টি তার জানা নেই। মারামারির ঘটনায় এজাহারের সঙ্গে তাদেরকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আসতে বলা হয়। কিন্তু তারা আর আসেননি। এ জন্য এই মামলাও নেওয়া হয়নি।’
তবে হামলার শিকার শিশু মো. ওমরের (৭) মা হাফিজা বেগম বলেন, ‘ওসি মিথ্যা বলেছেন। তারা মামলা করতে এজাহারে যাবতীয় সব কাগজপত্র নেওয়া হলেও ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম থানা থেকে তাদেরকে বের করে দেন।’
এ ব্যাপারে বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল হাসনাত খান বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/একে