খুলনায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিচয়ে প্রতারণা, গ্রেফতার ২
১১ মে ২০২৪ ২০:৫৩
খুলনা: খুলনায় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি, হুমকি প্রদর্শন ও চাঁদা দাবিসহ প্রতারণার অভিযোগে দুই প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১১ মে) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মোজ্জামেল হক। এর আগে শুক্রবার (১০ মে) নীলফামারী জেলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এরা হলেন নীলফামারী সদরের আব্দুন নুরের ছেলে মো. মনোয়ার হোসেন বাবু (৪৫) এবং একই থানা এলাকার আব্দুস সামাদের মো. শাহজালাল জিএম (৩৩)।
কেএমপি কমিশনার জানান, গত ২০ এপ্রিল বাংলাদেশ বেতার খুলনার অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে কর্মরত মো. সাঈদুজ্জামানের ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে একটি মোবাইল নম্বর থেকে কল করে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি নিজেকে বাংলাদেশ বেতার সদরদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দেন। এ সময় সাঈদুজ্জামানকে তার কর্মস্থল থেকে অন্যত্র বদলির হুমকি দিয়ে বদলির তালিকা থেকে নাম কাটানোর জন্য টাকা দাবি করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ বেতার খুলনা উপকেন্দ্রের ৯ জনকে ফোন করে এবং মুখ্য পরিদর্শকের কার্যালয়, পাট অধিদফতর দৌলতপুরের আরো কিছু কর্মকর্তাকে ঐ একই নম্বর হতে কল করে অনৈতিক অর্থ প্রদানের প্রস্তাবের অভিযোগ পাওয়া যায়। এমনকি তাদের মধ্যে খুলনা পাট অধিদফতরের পরিদর্শক এএম আক্তার হোসেনের নিকট থেকে কৌশলে প্রতারণা করে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়।
ভুক্তভোগী সাঈদুজ্জামান এই ঘটনা জানালে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে নেমে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে। পরবর্তীতে ঘটনার বিষয়ে সাঈদুজ্জামানকে মামলা করার জন্য বলা হলে তিনি মামলা করেন।
এরপর সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশের একটি টিম শুক্রবার নীলফামারী জেলায় অভিযান পরিচালনা করে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রতারক মো. মনোয়ার হোসেন বাবু ও মো. শাহজালাল জিএমকে নীলফামারী জেলার পাঁচ রাস্তা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা মূলত একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সময়ে সরকারি আমলা, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন বাহিনী ও প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন প্রভাবশালী কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মানুষকে ফোন করে প্রভাবিত করার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে প্রতারিত করে। এক্ষেত্রে তাদের তথ্য প্রাপ্তির মূল সোর্স হচ্ছে সরকারি তথ্য বাতায়ন, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রত্রিকার বিজ্ঞাপন এবং ভিজিটিং কার্ড। এগুলো থেকে সহজেই তারা তথ্য সংগ্রহ করে। তাদের বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলায় পাট অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ফেনী জেলায় বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং নোয়াখালী জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মরত চিকিৎসকদের কাছে স্বাস্থ্য সচিব পরিচয় দিয়ে কল করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সারাবাংলা/একে