ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে যুবদলের সমাবেশে ককটেল বিস্ফোরণ: রিজভী
১২ মে ২০২৪ ২১:২৫
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে শনিবার নয়াপল্টনে যুবদলের সমাবেশস্থলের পাশে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসিচব রুহুল কবির রিজভী।
রোববার (১২ মে) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ জনবিচ্ছিন্ন ভোটারবিহীন সরকার দিন দিন অস্থির বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উপজেলা নির্বাচনে ভোট বর্জনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা মার্কা হাস্যকর তামাশার নির্বাচনে দেশের জনগণ শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়ার পর সরকার আরও উদ্ভ্রান্ত হয়ে উঠেছে। চরম কলংকিত অপদস্তমূলক লজ্জার পরাজয় ঘটেছে গণবিচ্ছিন্ন বেপরোয়া একনায়ক মাফিয়া প্রধান শেখ হাসিনা গংদের।’
তিনি বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে একেবারেই জনপ্রিয়তা শূন্য হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। একটি দল নিজের কর্মদোষে ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন হওয়ার এটা বড় উদহারণ। এখন তাদের সঙ্গে কিছু লুটেরা আর ভারত ছাড়া কেউ নেই। দেশজুড়েই একদলীয় ভোটারবিহীন ডামি সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে জনগণের পদধ্বনি বাড়ছে। সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে জনগণের সুদৃঢ় ইস্পাত কঠিন ঐক্য দেখে ভীত সন্ত্রস্ত শেখ হাসিনা আবারও নতুন করে বিএনপিসহ বিরোধীদল নিশ্চিহ্ন করতে ভয়ংকর ক্র্যাকডাউনের পরিকল্পনা করেছেন।’
রিজভী বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবর জনগণের মহাসমাবেশ লন্ডভন্ডের মাধ্যমে যেভাবে পরিকল্পিতভাবে সংঘাত সৃষ্টি করে বিরোধীদলের ওপর দমনাভিযান চালিয়েছে, একই কায়দায় গতকাল শনিবার যুবদলের সমাবেশের দিনে গোয়েন্দা সংস্থা ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় পলিথিন ব্যাগের মধ্যে ককটেল বিস্ফোরণের নাটক সাজানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সমাবেশের আগের দিন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নয়াপল্টনে জনজোয়ার দেখে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের হুংকার দিয়ে বলেছিলেন, ‘বিএনপি আবার নৈরাজ্য করলে আগে তো একটা শিক্ষা দিয়েছি, এবার ডাবল শিক্ষা দেব। আমরা বসে নেই।”
রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের ডাবল শিক্ষা দেওয়ার ঘোষণার পরই আওয়ামী নৈরাজ্য, সন্ত্রাস ও অরাজকতা করার এজেন্টরা মাঠে নেমেছে। তারাই নয়াপল্টনে পলিথিনের ভেতর ককটেল রেখে এক ভবঘুরে কিশোরকে আহত করেছে। তারা পরিকল্পিতভাবে আরও নৈরাজ্য সহিংসতা করতে পারে বলে জনগণ সন্দেহ করছে। কারণ, শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন দেখলেই তা ছিন্নভিন্ন করার জন্য হামলে পড়াই শেখ হাসিনার দমন বাহিনীর কাজ।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার মসনদ রক্ষার প্রভু ভারতের মদদে গত ৭ জানুয়ারির একদলীয় ভোটারবিহীন ডামি নির্বাচনের পরে বায়বীয় সরকারকে রক্ষার জন্য বিশেষ বাহিনী গঠন করা হয়েছে। তারা নানা মিথ্যা অজুহাতে বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যা, নির্যাতন, গ্রেফতার, দমন-নিপীড়ন—সাঁড়াশি আক্রমণ চালাচ্ছে। নিপীড়ন-নির্যাতনের মাধ্যমে বিরোধী দলকে নির্মমভাবে দমন করবার জন্য নিজেরাই নৈরাজ্য—সন্ত্রাসের মাধ্যমে একটি পরিকল্পিত অরাজকতা সৃষ্টি করছে।’
রিজভী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য ওবায়দুল কাদেররা নানা কারসাজি করে যাচ্ছে। গত ২৮ অক্টোবর সমাবেশের প্রাক্কালে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, বিএনপি সমাবেশ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে হেফাজতের পরিণতি হবে, অর্থাৎ হেফাজতের আলেম—ওলামাদের রক্তে ঢাকার রাস্তা যেমন ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ঠিক তেমনি পরিণতি করবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। তারা বিএনপির ২৮ অক্টোবরের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে রক্তাক্ত হামলা করে বানচাল করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ গণতন্ত্রের শক্তির কর্মসূচিকে রক্তাক্ত হামলায় বানচাল করার ঘোষণা তারা এখন আগাম দিচ্ছেন এবং সেটা বাস্তবায়নও করছেন। লুটপাটের রাজত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য বিবেকহীন বিকৃত মানসিকতা নিয়ে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছেন। গতকাল যুবদলের সমাবেশস্থলের পাশে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে সরকারী গোয়েন্দাদের দ্বারা সৃষ্ট।’
সারাবাংলা/এজেড/একে