১৫৩ রোহিঙ্গার জন্মনিবন্ধন: ইউপি চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত
১৫ মে ২০২৪ ২২:৩৭
ঢাকা: ১৫৩ জন রোহিঙ্গাকে অসৎ উদ্দেশ্যে জন্ম নিবন্ধন করিয়ে দেওয়ার অভিযোগে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
গত ২৪ এপ্রিল ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। বুধবার (১৫ মে) রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুপ্রভাত চাকমা এ তথ্য নিশ্চিত করে সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখন এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় অধিকতর তদন্ত করবে। অপরাধ প্রমাণ হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’
স্থানীয় সরকার বিভাগ সুত্রে জানা যায়, নকুল চন্দ্র দাস রাজনগর উপজেলার ১ নম্বর ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। নিয়ম অনুযায়ী জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের স্থানীয় নিবন্ধক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। আর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের আবেদন যাচাই-বাছাই করেন তার জন্য বরাদ্দ আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে। আবেদন যথাযথ মনে হলে নিজস্ব আইডি ও পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে তা অনুমোদন দেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। এই আইডি ও পাসওয়ার্ড হস্তান্তরযোগ্য না।
অভিযোগ উঠেছে, চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাস ওই আইডি দিয়ে ১৫৩ জন রোহিঙ্গাকে জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়েছেন। আর এ ঘটনা ঘটেছে গত বছরের সেপ্টেম্বরে। ওই জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে পাসপোর্ট করতে গেলে শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর প্রাথমিক তদন্ত থেকে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল ইউপি চেয়ারম্যান নকুলকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ ইউপির ক্ষমতা প্রয়োগের দৃষ্টিকোণ থেকে সমীচীন নয়। তার এই অপরাধমূলক কার্যক্রম ইউপিসহ জনস্বার্থের পরিপন্থি। এ কারণে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ৩৪ (৪) (খ) (ঘ) ধারা অনুযায়ী তাকে তার পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজনগরের ইউএনও সুপ্রভাত চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় সরকার বিভাগ দেখছে। মন্ত্রণালয় আরও তদন্ত করবে। তদন্ত শেষে তার অপরাধ চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হলে মন্ত্রণালয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়েও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হলে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ৩৪ (৪) (খ) (ঘ) ধারা অনুযায়ী ওই জনপ্রতিনিধি স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হবেন। ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো চেয়ারম্যান বা সদস্য পরিষদ বা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর কাজে যুক্ত বলে দায়ী হলে তাকে পদ থেকে অপসারণ করা যাবে।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর