উপজেলার গাছ কেটে আসবাবপত্র বানাচ্ছেন ইউএনও!
২৯ মে ২০১৮ ১৭:০২
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসকন্ডেন্ট ।।
খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে নিয়ম না মেনে পরিষদ প্রাঙ্গণের গাছ কেটে আসবাবপত্র বানানোর অভিযোগ উঠেছে। সরকারি স্থাপনা কিংবা সামাজিক বনায়নের আওতাধীন গাছ কাটার আগে বনবিভাগের মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ ও নিলাম আহ্বানের নিয়ম থাকলেও এ বিষয়ে বন বিভাগের কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বন বিভাগের রেঞ্জার। ইউএনও নিজেও গাছ কাটার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন, পরিষদের প্রয়োজনেই কাটা হয়েছে এসব গাছ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, গত এপ্রিল মাসে পানছড়ি উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন স্থানে সেগুন, মেহগনি, কড়ই ও চাপালিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির ২০-২৫টি গাছ কাটা হয়েছে। এসব গাছের বেশিরভাগেরই বয়স ২০ থেকে ৩০ বছর।
স্থানীয় ভাগ্য মোহন ত্রিপুরা জানান, গত এপ্রিল মাসের শেষ দিকে তিনি উপজেলা কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি পুরনো বেশকিছু সেগুন, কড়ই, চাপালিশ ও মেহগনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটা হচ্ছে দেখতে পান। ভাগ্য মোহন বলেন, আগে গাছগুলোর নিচে বসে সেবাপ্রার্থীরা বিশ্রাম নিতে পারতেন। এখন সেই সুযোগও থাকছে না। দিন দিন পাহাড়ে গাছ কমতে থাকায় প্রশাসন থেকেও এভাবে গাছ কাটা শুরু হলে তা পরিবেশের জন্য বিপর্যয়ের কারণ হবে বলে মনে করেন তিনি।
পরিষদ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, উপজেলার সর্বোচ্চ কর্তা ব্যক্তি যদি এভাবে নির্বিচারে গাছ কেটে পরিবেশের ক্ষতি করেন, তাহলে সাধারণ জনগণ কার কাছে গিয়ে এসব বিষয়ে প্রতিকার পাবেন?
গাছ কাটার জন্য বন বিভাগের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা— তা বন বিভাগ পানছড়ি রেঞ্জের রেঞ্জার মোশারফ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এমন কোনো তথ্য তার জানা নেই।
তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের গাছগুলোর সরকারি সম্পত্তি। কোনো কারণে গাছ কাটতে হলে বন বিভাগকে অবহিত করতে হবে, যথাযথ কারণ দেখাতে হবে। এরপর গাছ বা কাঠের মূল্য নির্ধারণ করে তারপর গাছ কাটতে হবে। কিন্তু পানছড়ি উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের গাছ কাটার বিষয়ে বন বিভাগকে কিছু জানানো হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
পানছড়ির ইউএনও আবুল হাশেমও গাছ কাটার কথা স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, পরিষদের প্রয়োজনে কয়েকটি গাছ কাটা হয়েছে। এগুলো দিয়ে সেবাপ্রার্থীরে জন্য একটি গোলঘর নির্মাণ ও হলরুমের জন্য কিছু আসবাবপত্র বানানো হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমা ও বন বিভাগের রেঞ্জারকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে পানছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
সারাবাংলা/টিএম
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook