এক-দুই টাকার কয়েন অচল, ‘গুজব’ বলছে ব্যাংক
১৭ মে ২০২৪ ০৮:১৭
কুষ্টিয়া: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলায় এক ও দুই টাকার কয়েন চলে না। ফলে খুচরা লেনদেনে বিপাকে পড়ছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। স্থানীয় ব্যাংকগুলো এসব মুদ্রা না নেওয়ার কারণে অচল হয়ে পড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
তবে বিষয়টিকে ‘গুজব’ বলছেন স্থানীয় ব্যাংগুলো। সরকার অনুমোদিত সব নোট ও মুদ্রা নিতে ব্যাংকগুলো বাধ্য বলেও জানিয়েছেন তারা। একইসঙ্গে বিষয়টি সমাধানে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যাংকগুলো।
শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও ইবির পার্শ্ববর্তী বাজারগুলো ও ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ দোকানগুলোতে বিক্রেতারা ১ ও ২ টাকার কয়েন নিচ্ছেন না। এতে ৪, ৯ ও ১৪ টাকার মতো খুচরা কেনাকাটা করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন ভোক্তারা। হয় দোকানিকে বেশি দিতে হচ্ছে, না হলে বাকি রাখতে হচ্ছে। আবার কোনো কোনো দোকানে টাকার পরিবর্তে লজেন্স বা চকলেট বা সমপরিমাণ টাকার পণ্য নিতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাইনিংগুলোতেও ২২, ২৮ ও ৩৮ টাকার খাবার কিনলে বিপাকে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। মাঝেমাঝে ২ টাকা বাকি ও ২ টাকা অতিরিক্ত দিয়ে খেতে হয় তাদের। খুচরা টাকা নিয়ে ব্যবসায়ী ও ডাইনিং ম্যানেজারদের সঙ্গে তর্কে জড়ানোর মতো ঘটনাও ঘটে।
ইবির কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিদিনই তাদের ১ ও ২ টাকার খুচরা নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। ডাইনিং থেকে শুরু করে ক্যাম্পাসের আশপাশের দোকানগুলোতে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হচ্ছে। প্রতিদিনই দুই-তিন বার এ রকম ঘটনার মুখোমুখি হওয়ায় তাদের দৈনন্দিন খরচও বাড়ছে। তারা এ বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
এদিকে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের স্থানীয় ব্যাংকগুলো এসব ধাতব মুদ্রা গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ক্যাম্পাসের দোকানদারদের। তারা জানান, ৫ বছর আগেও এসব মুদ্রা সচল ছিল। স্থানীয় ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ীদের থেকে এসব ধাতব মুদ্রা না নেওয়ার কারণে অচল হয়ে পড়েছে। এজন্য ব্যবসায়ী ও ক্রেতা উভয়ই এগুলো দিয়ে লেনদেন করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন।
অগ্রণী ব্যাংক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক রোকন উদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংকে ২৫ পয়সার কয়েন নিয়ে এলেও আমরা নিতে বাধ্য। এ অঞ্চলে কেন এসব মুদ্রা ব্যবহার হচ্ছে না, তা জানি না।’
সোনালী ব্যাংক শেখপাড়া শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকের মাঝে মধ্যে কয়েন প্রয়োজন পড়লে তখন তো বাজারে গিয়ে খোঁজ করতে হয়।’
সোনালী ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মূলত বাজারকে কয়েন সংকটে ফেলছে কিছু সিন্ডিকেট চক্র। তারাই এ সব গুজব রটাচ্ছে। প্রশাসনের উচিত এদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা।’
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে মুদ্রার মূল্যমান কমে যাওয়ার ফলে এসব কয়েন দিন দিন অচল পড়েছে বলে মনে করছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুঈদ রহমান। তিনি বলেন, ‘মানুষ এখন এসব কয়েন অপ্রয়োজনীয় মনে করছে। ফলে এগুলোর ব্যবহার কমে যাচ্ছে। কারণ, পাঁচটি পাঁচ টাকার কয়েন ধারণ করার চেয়ে একটি ২০ টাকার নোট ব্যবহার খুবই সহজ। তাই মানুষ সহজটি গ্রহণ করছে।’
সারাবাংলা/একে
১ টাকার কয়েন ২ টাকার কয়েন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কয়েন খুচরা টাকা ব্যাংক