‘দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা টালমাটাল’
১৮ মে ২০২৪ ২১:৩৮
ঢাকা: দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা ‘টালমাটাল’ বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমেদ বীরবিক্রম।
শনিবার (১৮ মে) বিকেলে মগবাজার এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অলি আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ আশঙ্কাজনক হারে প্রতিনিয়ত হ্রাস পাচ্ছে এবং দেশি মুদ্রার তারল্য সংকট প্রতীয়মান হচ্ছে। বাণিজ্যে বিরাজ করছে স্থবিরতা। মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের উপরে। গত দুই বছরে টাকার মান কমেছে ৩৮-৫১ শতাংশ, টাকার প্রবাহও হ্রাস পেয়েছে। ব্যাংকগুলোতে টাকার হিসাবে গরমিল দেখা দিয়েছে। আর্থিকখাতে বাংলাদেশ রেড জোনে প্রবেশ করেছে। সুতরাং আর্থিক ঝুঁকি খুবই বড়।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা টালমাটাল। যেকোনো সময় ধস নামতে পারে। আমরা মনে করি এই অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে দেশ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে বাধ্য। হয়তো নিয়ন্ত্রণের বাইরেও চলে যেতে পারে।’
অলি আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান সরকার বিগত ১৫ বছর ধরে বাকশালী কায়দায় দেশ শাসন করছে। তাদের বলব, আল্লাহর ওয়াস্তে এখন ক্ষান্ত হোন। জনগণকে তাদের ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করার সুযোগ দেন। আমি না থাকলে দেশ চলবে না এই ধরনের ভ্রান্ত ধারণা থেকে বের হয়ে যান।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করছে, সর্বসাধারণের ওপর জুলুম-নির্যাতন ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। দেশে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে দেশে কখনই শান্তি ফিরে আসবে না, অস্বস্তিকর পরিস্থিতি কাটবে না।’
অলি আহমেদ বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কৃষক-শ্রমিক-যুবক-ছাত্র সমাজ সকলে নিজ নিজ জায়গা থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব বিএনপির নেতৃত্বে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন, প্রস্তুতি নিন। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এই সরকারের পতন হবে, দেশে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস ও স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ভারত সরকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষাভাবে দায়ী। আমি নিজে শুনেছি, কয়েকদিন আগে ভারতের কংগ্রেসের সভাপতি একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমরা পাকিস্তানকে দুই টুকরা করে তাদের দুর্বল করে দিয়েছি। তার এই বক্তব্য সুস্পষ্ট বোঝা যায়, বাংলাদেশের জনগণ তাদের বন্ধু নয়।’
অলি বলেন, ‘আমরা তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো বিরূপ মন্তব্য নাই। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, ভারত সরকার কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে সম্পর্ক করা থেকে বিরত থাকবে বরং ভারতের জনগণের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্ব স্থাপনে মনোযোগী হবে। আসুন আমরা একে অপরের সম্পূরক হিসেবে কাজ করি, ভালো প্রতিবেশি হিসেবে বসবাস করি। এতেই সবার মঙ্গল নিহিত।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার ভারতকে আমাদের দেশের সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর, বিভিন্ন সড়ক ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। অনেকগুলো অসম চুক্তিও সই করেছে। তারপরও কেন ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।’
অলি আহমেদ বলেন, ‘মেহেরবানি করে আমাদেরকে আমাদের মতো করে থাকতে দিন। ভারত সরকারের বর্তমান মনোভাব পরিবর্তন না হলে উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল আলম তালুকদার, নেয়ামূল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, কে কিউ স্যাকলায়েন প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম