থানচিতে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন, জড়িত প্রভাবশালীরা
২০ মে ২০২৪ ০৮:৩৭
বান্দরবান: থানচির সাঙ্গুর চর থেকে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। আওয়ামী লীগ নেতা থেকে শুরু করে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও ঠিকাদার সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নেমেছে বালু তোলার প্রতিযোগিতায়। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে দীর্ঘদিন ধরে রাতের বেলায় তারা ট্রাকযোগে বিভিন্ন স্থানে এই বালু পাচার করে আসছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, থানচির বলিপাড়ার কানাজিও পাড়া, ঙাইক্ষ্যং পাড়া, মংনাই পাড়ায় মেম্বার উচনু, বলিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া অং ও ঠিকাদার আনোয়ার, বলিপাড়ার নাইন্দারী পাড়ায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি বাসিংঅং মারমা, আমতলী পাড়ায় যুবলীগ সভাপতি অনিল ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদক চহাই মারমা, মালিরাম ত্রিপুরা ও ঠিকাদার সুজনসহ কয়েকজন এ বালু উত্তোলনে জড়িত।
এদিকে, শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে অবৈধভাবে সাঙ্গু নদী থেকে বালু তোলার সময় থানচি যুবলীগ সভাপতি অনিল ত্রিপুরা ও সম্পাদক চহাইনু মারমার একটি বালু ভর্তি ট্রাক জব্দ করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এ সময় ট্রাক চালক ও সহকারীকে আটক করলেও পরে শুধু ট্রাকটি জব্দ করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, থানচি সদর ইউনিয়নের আমতলী পাড়ার মংচসিং কারবারি ও প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা উহ্লাচিং মারমার খামার ঘাট থেকে তিন মাস ধরে ড্রেজার দিয়ে অনিল ত্রিপুরা ও চহাইনু মারমা প্রায় কয়েক লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করেছেন।
এদিকে, একাধিক বালু উত্তোলনকারী জানান, এই বালু ঠিকাদার আনোয়ার চকরিয়ার ভাউচার ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর বাকলাই সড়ক উন্নয়ন কাজের জন্য নিয়ে যাচ্ছে। তারা আরও জানায়, আনোয়ার চকরিয়া থেকে যে বালু আনে তার সঙ্গে এই বালু মিশিয়ে নিয়ে নিয়ে যায়। তাদের দাবি, এমন কাজ করে আনোয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও প্রতারণা করছেন।
বালুর ট্রাক জব্দের বিষয়ে সম্পাদক চহাইনু মারমা বলেন, ‘এলাকার কিছু অসহায় ছেলে আছে, তাদের আমরা সহযোগিতা করছি। আমরা নিজেরা কোনো বালু উত্তোলন করছি না।’
থানচি যুবলীগ সভাপতি অনিল ত্রিপুরা বলেন, ‘থানচির সবাই খুব কষ্টে আছে। তাই নিজেদের (সরকার দলের) ছেলেদের সহযোগিতা করছি।’ তিনি বলেন, ‘স্থানীয় বালু উত্তোলন না করলে এখানকার সরকারি উন্নয়ন কিভাবে হবে?’
অপরদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, ‘রাতে অবৈধভাবে পাচারের সময় বালুভর্তি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। এ সময় দুজন আটক করা হলেও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ ট্রাক ও বালু পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
এ বিষয়ে বান্দরবান পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘থানচির বালু উত্তোলনের ব্যাপারে আমার জানা নাই। আমি অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
সারাবাংলা/পিটিএম