ঢাকা: বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজলের দায়িত্ব পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে মনোয়ার হোসেন ডিপজল সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
একইসঙ্গে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচনে অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে এ তদন্ত করতে বলা হয়েছে।
সোমবার (২০ মে) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
রুলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচনে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ কেন তদন্ত করা হবে না এবং নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
৪ সপ্তাহের মধ্যে তথ্য সচিব, সমাজ কল্যাণ সচিব, সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক, নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা আপিল বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে নিপুণের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী পলাশ চন্দ্র রায়।
আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী পলাশ চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচনের সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজলের ফলাফল স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক পদে তার দায়িত্ব পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এর ফলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজল দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।’
একইসঙ্গে নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এ বিষয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৪ মে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচনে অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত, নির্বাচনে ফলাফল বাতিল এবং মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজলের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন পরাজিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নাসরিন আক্তার নিপুণ।
চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের পক্ষে আইনজীবী পলাশ চন্দ্র রায় এ রিট দায়ের করেন। রিটে তথ্য সচিব, সমাজ কল্যাণ সচিব, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা আপিল বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪–২৬ মেয়াদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে নিপুণ ও মাহমুদ কলি প্যানেলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মিশা-ডিপজল প্যানেল। ভোট গ্রহণ শেষে ২০ এপ্রিল সকালে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে জয়ী হয় মিশা-ডিপজল প্যানেল জয়ী হয়।
ওইদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।
ঘোষিত ফলাফলে সভাপতি পদে মিশা সওদাগর ২৬৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। আর ১৭০ ভোট পান তার প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী মাহমুদ কলি। অন্যদিকে মাত্র ১৬ ভোটের ব্যবধানে সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজলের কাছে হেরে যান নিপুণ আক্তার। যেখানে ডিপজল পান ২২৫ ভোট আর নিপুণ আক্তার পান ২০৯ ভোট।