বিবিএস: এনএইচডি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নিষ্পত্তির নির্দেশ
২০ মে ২০২৪ ২৩:৫১
ঢাকা: দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ন্যাশনাল হাউজহোল্ড ডাটাবেজ (এনএইচডি) প্রকল্পের নামে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কর্মকর্তাদের অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) করা আবেদন ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (২০ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আবু জাফর শেখ মানিক। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
পরে আইনজীবী আবু জাফর শেখ মানিক বলেন, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তথ্য সংগ্রহের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল হাউজহোল্ড ডাটাবেজ (এনএইচডি) প্রকল্পে (জুলাই ২০১৩ থেকে ডিসেম্বর ২০২০) পরিসংখ্যান ব্যুরোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে দুদকে দায়ের করা আবেদন ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দুদকের তদন্তে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এই আইনজীবী জানান, পাশাপাশি অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে দুদক চেয়ারম্যান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিসংখ্যান ব্যুারোর সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদন থেকে জানা যায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তথ্য সংগ্রহের জন্য বিবিএসের মাধ্যমে ২০১৬ সালে এনএইচডি প্রকল্প চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই প্রকল্পের জন্য ৫৪৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ পান। ওই জনবলকে দাফতরিক বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য উপজেলা ও জেলা পরিসংখ্যান অফিসগুলোতে সংযুক্ত করা হয়। পরে ২০২২ সালের জুন মাসে তাদের জেরক্স ইন্ডিয়া কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অধীনে নিয়োগ দেওয়া হয়।
জানা যায়, ওই প্রতিষ্ঠান ১৪টি জেলার তথ্য আংশিক সংশোধন ও ৫০টি জেলার ডাটা অসমাপ্ত রেখে প্রকল্পের ১১২ কোটি ৪৪ লাখ ২৫ হাজার ৬২২ টাকা তুলে নেয়। প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ছিল ৭২৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ বাবদ ছিল ৬৮৬ কোটি ৮০ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, সরকারের বরাদ্দ ছিল ৪০ কোটি ৫২ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
আইনজীবী আবু জাফর শেখ বলেন, প্রকল্পে নিয়োগ পাওয়া ৫৪৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের মাসিক বেতন-ভাতা না দিয়ে এবং প্রকল্পের টিপিপির সুপারিশ অনুযায়ী তাদের চাকরি রাজস্ব স্থানান্তর না করে সরকারি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে কর্মকর্তারা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। পরে ভুক্তভোগী ৭৩ ডাটা এন্ট্রি অপারেটর প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেন। এ ছাড়া অনিয়মের অভিযোগ এনে দুদকের কাছে ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পর দুদকের পক্ষ থেকে সাড়া না পেয়ে গত ৯ মে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়ের করেন ওই ৭৩ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। আজ সেই রিটের শুনানি শেষে দুদকে করা আবেদন ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পিত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর
এনএইচডি প্রকল্প ন্যাশনাল হাউজহোল্ড ডাটাবেজ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিবিএস