Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সহিংসতার দিকে এগোচ্ছে মঠবাড়ীয়া উপজেলা নির্বাচন

আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৩ মে ২০২৪ ১৪:২৬

ঢাকা: ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আরও শতাধিক উপজেলার সঙ্গে ভোট নেওয়া হবে পিরোজপুরের মঠবাড়ীয়া উপজেলাতেও। আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের বাকি আর মাত্র পাঁচ দিন। তবে নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই এগিয়ে আসছে, ততই নির্বাচনে দুই প্রতিপক্ষের কর্মী-সমর্থকরা আরও বেশি বেশি সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছেন। পথসভা-গণসংযোগে চালানো হচ্ছে হামলা।

স্থানীয়রা বলছেন, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে নির্বাচনের দিন ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ থেকে শুরু করে প্রাণহানি পর্যন্ত ঘটে যেতে পারে।

মঠবাড়ীয়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দুজন— দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী বায়জিদ আহমেদ খান এবং আনারস প্রতীকের প্রার্থী রিয়াজ আহমেদ। তারা দুজনেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত। এর মধ্যে বায়জিদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। অন্যদিকে রিয়াজ স্থানীয় সংসদ সদস্য (স্বতন্ত্র) শামীম নেওয়াজের ছোট ভাই এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। তার ছোট ভাই আশরাফ উর রহমান মঠবাড়ীয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান। রিয়াজ এই উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান।

সংঘাত-সংঘর্ষ ঘটছে নিয়মিত

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, প্রতিদ্বন্দ্বী দুজনই আওয়ামী লীগের বলয়ের হওয়ায় তৃণমূলে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হয়েছে নির্বাচন ঘিরে। সেই বিভক্তি থেকেই সূত্রপাত ঘটছে সংঘর্ষ-সংঘাতের।

স্থানীয় ভোটার, প্রার্থী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঠবাড়ীয়া উপজেলা নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা ও সংঘর্ষ চলছে গত কয়েক দিন ধরেই। সর্বশেষ গত ২১ মে রাত ১১টার দিকে টিকিকাটা বাইশ কুড়া এলাকায় রিয়াজ আহমেদের সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত কয়েজনের মধ্যে একজনকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে হস্থান্তর করতে হয়।

এর আগে গত ১৪ মে রাতে মঠবাড়ীয়ার শহিদ মোস্তফা খেলার মাঠে বায়জীদ পথসভা শেষে মিরুখালী বাজারে নির্বাচনি অফিসে বসেন। এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রিয়াজের সমর্থকরা মিরুখালী বাজারে মিছিল বের করেন। মিছিলটি দোয়াত কলম প্রতীকের নির্বাচনি ক্যাম্পের সামনে পৌঁছালে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে দুপক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

ওই সংঘর্ষে দুপক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে আহতদের মধ্যে আনারস প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক বাবলু তালুকদার ও দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক মোস্তফা খানকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।

এ ছাড়া নির্বাচনি মিছিলে যাওয়ার পথে দক্ষিণ সোনাখালী এলাকায় আনারস প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক কলেজছাত্র মামুনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটে। এর বাইরেও প্রায়ই দুপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষ লেগেই আছে।

অস্ত্র প্রদর্শনের ছবি ‘ভাইরাল’

২০ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, চেয়ারম্যান প্রার্থী বায়জিদের পাশে হলুদ টি-শার্ট পরা এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে রয়েছেন, যার কাছে রয়েছে একটি অস্ত্র। অস্ত্র বহন করা অবস্থায় বায়জিদেরও বেশকিছু ছবি ছড়িয়েছে অনলাইনে। অন্যদিকে রিয়াজের কর্মী-সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত, এমন অভিযোগও রয়েছে।

এসব ছবি প্রতিপক্ষের কর্মী-সমর্থকসহ স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব ছবির কোনোটিই সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এগুলো পুরনো ছবি। তবে এসব ছবি নিয়ে কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি থানা বা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে।

চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে সশস্ত্র ব্যক্তির ছবি নিয়ে কথা হয় মঠবাড়ীয়ার বেশ কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে। তারা কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে দাউদখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক খান রাহাত সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাইজিদ আহমেদ খান জাতীয় নির্বাচনের পরপরই খোলামেলাভাবে অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করেছেন। যে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে, সেটি গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকের। তবে এখনো বায়জিদ ও তার সহযোগীদের কাছে অস্ত্র রয়েছে। বায়জিদের সঙ্গে কালাম মোল্লা ও মিজান বিশ্বাস নামে দুজনের কাছে অস্ত্র রয়েছে। কিন্তু তাদের সেই আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স আছে কি? আমার জানা নেই।’

ইউপি চেয়ারমান ফজলুল আরও বলেন, লাইসেন্সধারী অস্ত্র হলেও প্রয়োজন ছাড়া স্বাভাবিক পরিবেশে জনগণের সামনে সেটি প্রদর্শন করা যায় না। বায়জিদ সেটা করে যাচ্ছেন। বায়জিদ বাহিনী আমার বাড়িতেও পাঁচ-ছয়টি অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে।

অস্ত্র প্রর্দশনের ছবি নিয়ে জানতে চাইলে‍ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বায়জিদ আহমেদ খান সারাবাংলাকে বলেন, লাইসেন্স করা দুটি অস্ত্র আমার আছে। তবে ভাইরাল হওয়া ছবিটি পুরনো। প্রায় বছর পাঁচেক আগের। শীতকালের ছবি। তখন গাড়ি থেকে নেমেছি। কোনো কারণে অস্ত্রটি প্যান্টের পেছনের পকেটে রেখেছিলাম।

জানতে চাইলে মঠবাড়ীয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম সারাবাংলাকে বলেন, নানা ধরনের ঘটনার কথা শুনছি। ছবিও আমি দেখেছি। কিন্তু আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। ফলে আমি পদক্ষেপ নিতে পারছি না। অভিযোগ করলে যাচাই-বাছাই করে পদক্ষেপ নেব।

মঠবাড়ীয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাখাওয়াত হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক কোনো ছবি আমার নজরে আসেনি। কেউ হয়তো পুরনো ছবি ভাইরাল করার চেষ্টা করছে। তারপরও যাছাই-বাছাই করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নির্বাচনের সময় অস্ত্র বহন করায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনও রয়েছে। এরপর অনেকেই তাদের অস্ত্র থানায় জমা রেখেছেন। তারপরও কেউ আগ্নেয়াস্ত্র জমা না দিয়ে থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দুই প্রার্থীর কাছেই ভোট ঝুঁকিপূর্ণ

নির্বাচনে প্রতিপক্ষ রিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বায়জিদ বলেন, ‘মঠবাড়ীয়া মাদকে ছেয়ে গেছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জনগণ দিশেহারা। মাদক কারবার কারা করছে, মঠবাড়ীয়াবাসী তা জানে।’

রিয়াজের ছোট ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ উর রহমানের দিকে ইঙ্গিত করে এই চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন, ‘মাদক ও কিশোর গ্যাং কারা গঠন করেছে, কেন করেছে, সন্ত্রাসীদের মদতদাতা কারা, মাদক ব্যবসার গডফাদার কারা— এগুলো সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা উচিত। তাদের কারণেই মঠবাড়ীয়া উপজেলার ভোটে সব ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।’

জানতে চাইলে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী রিয়াজ আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমদের বিরুদ্ধে যা কিছু ছড়ানো হচ্ছে, সব অসত্য। মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে রাজনৈতিকভাবে আমাদের হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের যুদ্ধ মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। আমি উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মঠবাড়ীয়াবাসীর জন্য শান্তির জন্য কাজ করেছি। ভবিষ্যতেও করব।’

মঠবাড়ীয়ার পাশের উপজেলা ভাণ্ডারিয়ার একটি চক্র এই উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন রিয়াজ। বলেন, ‘মঠবাড়ীয়া ও ভাণ্ডারিয়া সীমান্তসংলগ্ন ভোটকেন্দ্রগুলো খুবই ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষ করে দেঅপুর, বুড়ির চর আকন বাড়ী, বগিরাতপুর, তুষখালী হাইস্কুল ও তুষখালী ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্রগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।’

মঠবাড়ীয়া উপজেলা নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র সম্পর্কে জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, উপজেলায় মোট ভোটকেন্দ্র ৮৮টি। এর মধ্যে কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ১৯টি, বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৪১টি।

বিএনপি-জামায়াতও আলোচনায়

এদিকে এই নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের একাংশ বায়জিদ ও একাংশ রিয়াজের পক্ষে রয়েছেন। তবে জামায়াতের নেতাকর্মীরা বায়জিদের পক্ষে কাজ করছেন।

জানতে চাইলে মঠবাড়ীয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রুহুল আমিন দুলাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপির একটি অংশ রিয়াজ আহমেদের পক্ষে রয়েছে। আরেক অংশ বায়জিদের পক্ষে রয়েছে। এগুলো সাংগঠনিক অবস্থান নয়। স্থানীয়ভাবে যে যাকে সমর্থন করেন, তার পক্ষে রয়েছেন।’

জামায়াতের দায়িত্বশীল কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। তবে দলটির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তারা বায়জিদের পক্ষে রয়েছেন। তবে প্রকাশ্যে নয়, আড়াল রেখেই বায়জিদকে সমর্থন করছেন নেতাকর্মীরা। সাধ্যমতো প্রচারও করছেন তার পক্ষে।

তবু সুষ্ঠু ভোটের প্রত্যাশা

এদিকে এই নির্বাচন ঘিরে এখন পর্যন্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ জমা পড়েছে ২১টি। মামলা হয়েছে পাঁচটি। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রিয়াজকে তলবও করেছে। আজ (বৃহস্পতিবার) নির্বাচন কমিশনে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে তার।

এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন অপরাধে ৫১ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করেছেন, পাঁচজনকে ১৫ দিনের কারাদণ্ডও দিয়েছেন।

নির্বাচনি পরিবেশ বজায় রাখার বিষয়ে সহাকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউএনও আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘নির্বাচনে যেন কোনো অপ্রীতিকার ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। জেলা থেকেও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসছেন এবং রাত পর্যন্ত থাকছেন। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। নির্বাচনের দিনের জন্য চার প্লাটুন বিজিবি চাওয়া হয়েছে।’

মঠবাড়ীয় সার্কেলের এএসপি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ দৃষ্টি রাখছে। আশা করছি নির্বিঘ্নে ভোট হবে।’

মঠবাড়ীয়া উপজেলায় মোট ভোটার দুই লাখ ২৬ হাজার ২২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ১৪ হাজার ৬৬৮ জন, নারী ভোটার এক লাখ ১১ হাজার ৫২১ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন একজন। আগামী ২৯ মে সকাল ৮টায় শুরু হবে ভোট গ্রহণ, চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

উপজেলা নির্বাচন তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন নির্বাচনি সংঘাত নির্বাচনি সহিংসতা পিরোজপুর মঠবাড়ীয়া উপজেলা ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কুষ্টিয়া থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৮

সম্পর্কিত খবর