হত্যার ৬ মাস পর আদালতে মামলা, স্ত্রী-মেয়ে গ্রেফতার
২৪ মে ২০২৪ ০৮:৫০
লালমনিরহাট: লালমনিরহাটে পল্লি চিকিৎসক হরেন্দ্রনাথ সেন হত্যার ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা নেয়নি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস পর আদালতে মামলা করেছেন নিহতের ছেলে প্রশান্ত সেন। এরপর আদালতের নির্দেশে মামলার দুই আসামি নিহত হরেন্দ্রনাথের দ্বিতীয় স্ত্রী মাধবী রাণী ও তার মেয়ে তাপসী রাণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২২ মে) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে এ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, পল্লি চিকিৎসক হরেন্দ্রনাথের প্রথম স্ত্রী মারা যান ১৯৯৮ সালে। পরে তিনি মাধবী রানীকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীর ‘নিয়ন্ত্রণে’ ছিলেন। ২০১২ সালে প্রথম স্ত্রীর সন্তান প্রশান্ত ও প্রদীপকে বাড়ি থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়। পরে প্রশান্ত ও প্রদীপকে বঞ্চিত করে হরেন্দ্রনাথের সব জমি কৌশলে নিজের নামে লিখিয়ে নেন মাধবী।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর মাধবী রানী হরেন্দ্রনাথকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। বাড়ির প্রধান দরজায় বন্ধ রাখায় গ্রামের লোকজন ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। পরে বিকেলে সদর থানা পুলিশ হরেন্দ্রনাথের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় হরেন্দ্রনাথের ছেলে প্রশান্ত লালমনিরহাট সদর থানায় হত্যা মামলার আবেদন করলেও পুলিশ মামলা নেয়নি।
পরে গত ১৩ মে হরেন্দ্রনাথের দ্বিতীয় স্ত্রী মাধবী রানীসহ আটজনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করেন প্রশান্ত। লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসাইনের আদালত মামলাটি রেকর্ড করে পাঁচ দিনের মধ্যে আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশকে। আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর বুধবার রাতে মাধবী ও তাপসীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার বাদী প্রশান্ত কুমার সেন বলেন, থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম। বারবার থানায় গিয়েছি। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ আমলে নেয়নি। বাধ্য হয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। আমরা বাবা হত্যার বিচার চাই।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) রাশেদুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর থানায় সাধারন ডায়রি (জিডি) করে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ভিসারা রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। এ কারণে এ ঘটনায় থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়নি। আদালতের নির্দেশে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের দুজনকে আজ (বৃহস্পতিবার) আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি আসামিদেরও শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে।
সারাবাংলা/টিআর
আদালতে মামলা বাবাকে হত্যা মেয়ে গ্রেফতার লালমনিরহাট স্ত্রী গ্রেফতার স্বামীকে হত্যা হত্যা মামলা