Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পাকিস্তানে ২২ পরিবার, এখন ২২ হাজার পরিবার অর্থনীতি ধ্বংস করছে’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ মে ২০২৪ ১২:৩২

সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে। ছবি: সারাবাংলা

রাঙ্গামাটি: পাকিস্তান আমলে যেখানে ২২টি পরিবার অর্থনীতিতে লুটপাট চালিয়েছে, বাংলাদেশে এখন তেমন ২২ হাজার পরিবার একই কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।

তিনি বলেন, একসময় আমরা পাকিস্তানের ২২ পরিবারের বিরুদ্ধে লড়েছি। এখন ২২ হাজার পরিবার দেশের অর্থনীতিতে ধংস করছে, লুট করছে। এখন বাজারের যে অবস্থা, পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে গেলেও ব্যাগভর্তি বাজার আনতে পারি না।

শুক্রবার (২৪ মে) সকাল ১১টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা উদীচীর নবম সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এবারের সম্মেলনের স্লোগান— ‘পাহাড়ে-সমতলে গেয়ে যাই গান, অধিকারে প্রতিরোধে জেগে ওঠো প্রাণ’।

সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে অমিত রঞ্জন দে বলেন, আমাদের দেশের কৃষকের কী অবস্থা, ভেবে দেখুন। ঢাকার বাজারে বেগুন ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। অথচ গ্রামে কৃষক সেই বেগুন বিক্রি করেন ৫-১০ টাকায়। মাঝে এক শ্রেণির মধ্যস্বত্বভোগী সব লুটপাট করছে। এ ধরনের নৈরাজ্যের মধ্য দিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

একটি শ্রেণি এখনো দেশকে অস্বীকার করে উল্লেখ করে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এক শ্রেণির মানুষ আছে, যারা এই দেশকে মেনে নিতে পারেনি। তারা এখনো এই দেশকে অস্বীকার করে, পাকিস্তানের তোষণ করে। এক শ্রেণি আছে, যারা সম্পদে ফুলে-ফেঁপে উঠতে চায়। এদের থামাতে কাউকে না কাউকে দাঁড়াতে হয়। উদীচী সেখানে দাঁড়াতে চায়। উদীচীর জন্ম এক ক্রান্তিকালে, এক অন্ধাকারাচ্ছন্ন সময়ে। যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, শোষণ হচ্ছে, অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, তখনই এই উদীচীর জন্ম।’

উদীচীর সম্মেলন শুরুর আগে সংগীত পরিবেশন। ছবি: সারাবাংলা

বর্তমান সময়ের কথা তুলে ধরে অমিত রঞ্জন বলেন, গণতন্ত্রহীনতার মধ্য দিয়ে আমরা সময় অতিবাহিত করছি। আমরা কথা বলতে পারছি না, কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। সাংবাদিক-লেখকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) দিয়ে হয়রানি-কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিলের মধ্যে যে কালো অধ্যায়গুলো রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আপনাদের জানতে চান। এগুলোর মাধ্যমে শ্রমিকদের তারা শাস্তির ব্যবস্থা করেই ক্ষান্ত হয়নি, যারা তাদের (শ্রমিক) সহযোগিতা করবে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে।

‘তাহলে যে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীন হলাম সেই স্বাধীনতা কি আছে? দেশে কি গণতন্ত্র আছে? আমরা কি ভোট দিতে পারছি?,’— প্রশ্ন রাখেন অমিত। বলেন, ‘আমরা যারা সংস্কৃতিকর্মী আছি, প্রগতি সাম্যের কর্মী আছি, তাদের দায়ও অনেকখানি। আজ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালাতে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। অথচ ধর্মীয় সব আয়োজন করা হচ্ছে। কেবল বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে সেসব কাজ, যেগুলো আমাদের বিকশিত করবে।’

উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী রাঙ্গামাটি জেলা সংসদের সভাপতি অমলেন্দু হাওলাদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বিজয় ধরের সঞ্চালনায় সম্মেলনের আলোচনা সভা অংশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় উদীচীর সহসাধারণ সম্পাদক প্রদীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও উদীচী চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব জহির উদ্দিন বাবর, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সুকুমার বড়ুয়া, সদস্যসচিব সাগর পালসহ অন্যরা।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সভাপতি সমীর কান্তি দে, সহকারী সাধারণ সম্পাদক এম জিসান বখতেয়ার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আশীষ দাশগুপ্তসহ অন্যরা এ সম্মেলনে উপস্থিত রয়েছেন। উদীচীর বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী এবং ছাত্র-যুব সংগঠকরা সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।

এর আগে সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি র‍্যালি শুরু হয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মিলিত হয়। বিকেলে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন রয়েছে।

সারাবাংলা/টিআর

অর্থনীতি লুটপাট উদীচী উদীচী রাঙ্গামাটি উদীচীর সম্মেলন টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর