সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ ৭ জেলায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় রেমাল
২৫ মে ২০২৪ ১৪:৪৯
ঢাকা: আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে মাত্র ৪৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এটি ক্রমান্বয়ে ঘনীভূত হচ্ছে। নিম্নচাপটি আজ রাতে ঘূর্ণিঝড় রেমালে পরিণত হতে পারে।
বিশ্বের বিভিন্ন আবহাওয়া মডেলের বরাত দিয়ে আবহাওয়া ডট কম জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রেমাল তার সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনা ৯০ শতাংশের বেশি।
ওয়েবসাইটটিতে আরও বলা হয়, শনিবার (২৫ মে) সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর সর্বশেষ অবস্থা অনুযায়ী, জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত মেঘের ঘূর্ণনের চলমান চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্র প্রায় ১৭ দশমিক তিন ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৯ দশমিক সাত ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশের উপর অবস্থান করছিল। গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্র পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে ও কলকাতা থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার শনিবার সকাল ৬টায় নিম্নচাপ কেন্দ্রের চার-পাশে ঘণ্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার বেগে বায়ু প্রবাহের তথ্য পেয়েছে।
ওয়েবসাইটটিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস যদিও নির্দেশ করছে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল রোববার (২৬ মে) সকালের পর থেকে উপকূলে আঘাত হানা শুরু করতে পারে, তবে ঘূর্ণিঝড় অনেক সময় হঠাৎ করে গতি বৃদ্ধি করে তিন থেকে ছয় ঘণ্টা আগেই উপকূলে আঘাত করার উদাহরণ দেখা গেছে অতীতে। শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যার আগেই পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ের পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই ঘূর্ণিঝড়টি সোজা উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করেছে প্রায় সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল। তাই শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে উপকূলীয় এলাকার মানুষদের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে নারী, শিশু ও বয়স্কদের আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রোববার সকাল থেকে পুরোদমে বৃষ্টি শুরু হবে, সেইসঙ্গে জোয়ারের কারণে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হবে।
আরও বলা হয়েছে, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পিরোজপুর, ও পটুয়াখালী জেলার উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে রোববার দুপুর ১২ টার পর থেকে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে বাতাস প্রবাহিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় এলাকার জেলাগুলোর উপর দিয়েও ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপর দিয়ে বাতাসের গতিবেগ অপেক্ষাকৃত কম থাকলেও এই দুই এলাকার উপকূলীয় এলাকায় জোয়ারে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রেমাল যেহেতু পূর্ণিমা রাতের মাত্র তিন দিন পরে উপকূলে আঘাত করবে তাই চন্দ্র-সূর্য ও পৃথিবীর মিলিত শক্তির কারণে স্বাভাবিকভাবেই জোয়ার-ভাটার পানির উচ্চতা বেশি থাকবে। এরসঙ্গে যুক্ত হবে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব। ঘূর্ণিঝড় রেমাল যদি জোয়ারের সময় উপকূল অতিক্রম করে তবে স্থান ভেদে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস ও ভাটার সময় উপকূল অতিক্রম করলে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
সারাবাংলা/জেআর/আইই