Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল, রাতে জারি হচ্ছে মহাবিপৎসংকেত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ মে ২০২৪ ১৬:৪৮

ঢাকা: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপ দ্রুতই ঘনীভূত হচ্ছে এবং ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে যাচ্ছে। এটি রোববার সন্ধ্যা নাগাদ উপকূলে আঘাত হানতে পারে এবং ঘূর্ণিঝড়টি রোববার (২৬ মে) নাগাদ খুলনার সাতক্ষীরা ও চট্টগ্রামের কক্সবাজারের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। এজন্য শনিবার মধ্যরাতে মহাবিপৎ সংকেত জারি হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৫ মে) সচিবালয়ে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিং এ তিনি এ তথ্য জানান।

দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরা বুঝতে পেরেছি, ঘূর্ণিঝড়টি আসন্ন। এখন ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত রয়েছে। আগামী ১ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে সংকেত ৩ নম্বরে চলে যাবে। এটা সতর্ক সংকেত। রাতে সতর্ক সংকেত ৪ নম্বর ছাড়িয়ে যেতে পারে। এমনকি বিপদের পর্যায়ে চলে যেতে পারে।’

আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস পর্যালোচনা করে আমরা ঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছি। তিনি বলেন, ‘রাত ১২টা-১টা নাগাদ এটা ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি হতে পারে। এমন একটা সম্ভাবনা রয়েছে।’

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রেখেছি। সার্বিক প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিয়েছি। ঘূর্ণিঝড়টিতে সাতক্ষীরা থেকে চট্টগ্রামের কক্সবাজার পর্যন্ত কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ৭ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এজন্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হতে পারে। রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানতে পারে।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ‘উপকূলীয় জেলায় আমাদের প্রায় ৪ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র আছে। এগুলো আমরা প্রস্তুত রেখেছি। খাদ্যের জন্য আমাদের প্রত্যেকটি জেলায় গুদামে পর্যাপ্ত শুকনো খাবারসহ যেসব জিনিস দরকার হবে এগুলো মজুত রেখেছি। প্রয়োজনে ঢাকা থেকে যাতে আরও সাপ্লাই দিতে পারি এজন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’

বিজ্ঞাপন

প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, রাত আটটায় আমরা আবারও মিটিং এ বসবো। রোববার (২৬ মে) সকাল ১১টায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এক কথায় এ ঘূর্ণিঝড় আসন্ন, সেটা মাথায় রেখে আমরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আমাদের কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছি।

কয়টি জেলা আক্রান্ত হতে পারে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকাটি অ্যাফেক্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে। এখন ৫০০ থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থান করছে। বিশেষ করে পায়রা ও মোংলা পোর্টের সরাসরি দক্ষিণে।

সিডরের মতো কি কোনো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, জানতে চাইলে দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বিপজ্জনক হতে পারে রাত ১২টা-১টা নাগাদ। এটা ১০ নম্বর মহাবিপদে চলে যেতে পারে, এরকম একটা সম্ভাবনা আছে। কালকে ভোর থেকে এটা প্রাথমিক আঘাত হানার সম্ভাবনা শুরু হবে। কালকে সন্ধ্যা নাগাদ মূলটা আঘাত হানবে। পূর্বাভাসে আমরা এরকমই বুঝতে পারছি এবং আজকে রাত ১২টা-১টা থেকেই এটা ডেঞ্জার পয়েন্টে চলে যেতে পারে।’

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের সবশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৮.২° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৮° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ (২৫ মে ) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।

এদিকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১ (এক) নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।

সারাবাংলা/জেআর/এমও

ঘূর্ণিঝড় ঘূর্ণিঝড় রেমাল বঙ্গোপসাগর মহাবিপৎ মহাবিপৎ সংকেত সংকেত

বিজ্ঞাপন

খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমলো
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৮

আরো

সম্পর্কিত খবর