বাগেরহাট: ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় ইতোমধ্যে মোংলা সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সবধরনের সতর্কতামূলক প্রস্ততি নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কোস্টগার্ড, নৌ-বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে শনিবার (২৫ মে) দুপুরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে জরুরি বৈঠক হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার সাইফুর রহমান বলেন, ‘মোংলা বন্দরে এই মুহূর্তে সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার, সার, পাথর ও গ্যাসবাহী ছয়টি জাহাজ অবস্থান করছে। সেগুলোকে নিরাপদে নোঙ্গর করতে বলা হয়েছে। তবে এখনও জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ করার পরিস্থিতি হয়নি। সংকেত বাড়লে পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ ছাড়া, বন্দরে একটি কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্ততি নিয়েছে মোংলা উপজেলা প্রশাসন। মোংলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, ‘১০৩ টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ ১৬০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস থেকে ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের কার্যক্রমের গতি বাড়ানো হবে। তবে এখনো কোনো কন্ট্রোলরুম খোলা হয়নি’।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ তিন হাজার ৫০৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জরুরি ত্রাণ কার্যে ব্যবহারের জন্য রয়েছে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার টাকা । পাশাপাশি মজুদ রয়েছে ৬৪৩ দশমিক ৪ টন চাল। এ ছাড়া, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিপদ সংকেত জারি হলে তারা এলাকায় মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করবেন। শুকনো খাবার, ওষুধ, ঢেউটিন ও নগদ টাকা প্রস্তত রাখা হয়েছে। প্রস্তত রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌ বাহিনী, কোস্ট গার্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মোংলা আবাহওয়া অফিসের ইনচার্জ হারুন অর রশিদ জানান, রেমালের বর্তমান যে অবস্থান দেখাচ্ছে তাতে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি বাংলাদেশের ওপর দিয়েই অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। সুন্দরবন এবং বরিশালের পটুয়াখালী, বরগুনা, ও ভোলা জেলায় রেমাল’র আঘাত হানার আশঙ্কা বেশি।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি মোংলা বন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এটি শনিবার (২৫ মে) রাত নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এ রূপ নিতে পারে। এবং তা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে রোববার সন্ধ্যায় সুন্দরবন উপকূল অতিক্রম করতে পারে।