Wednesday 20 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আমরা রাস্তায় নামতে চাই না, আমাদের যেন বাধ্য করা না হয়’

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
২৬ মে ২০২৪ ১৬:১১

ঢাকা: গত ১৩ মার্চ পেনশন সংক্রান্ত জারি করা প্রজ্ঞাপনকে ‘বৈষম্যমূলক’ উল্লেখ করে যতদ্রুত সম্ভব সেটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা রাস্তায় নামতে চাই না, আমাদের যেন বাধ্য করা না হয়।

রোববার (২৬ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী পুরকৌশল ভবনের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানান বুয়েটের শিক্ষকরা।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কর্মসূচি অনুযায়ী এই মানববন্ধনের আয়োজন করে বুয়েট শিক্ষক সমিতি।

মানববন্ধন থেকে শিক্ষকদের সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তিসহ শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবি জানান বুয়েট শিক্ষকরা।

মানববন্ধনে বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত ১৩ মার্চ যে পেনশন সংক্রান্ত যে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে, সেটি যতদ্রুত সম্ভব প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা শিক্ষকরা কখনোই রাস্তায় নামতে চাই না। কারণ আমাদের সম্মান-মর্যাদা রয়েছে। আমাদের যেন এই ধরনের আন্দোলনে নামতে বাধ্য না করা হয়।

তিনি বলেন, আমার যে সহকর্মী আগামী জুলাইয়ের পর জয়েন করবেন, সে একধরনের বৈষম্যমূলক ব্যবস্থায় পেনশন পাবেন; আবার আমরা যারা পুরনো, তারা পাব আগের পদ্ধতিতে। শুরুতেই তো আমাদের মধ্যে একধরনের পার্থক্য হয়ে যাবে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরনের বৈষম্যমূলক বিভাজন কোনোভাবে কাম্য নয়।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালে যখন নতুন পেনশন ব্যবস্থা চালু হয়েছে, তখন আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত করা এবং স্বতন্ত্র পেনশন ব্যবস্থা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। সে দাবিগুলো এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবি জানিয়েছি। এর মানে এই নয় যে, আমরা অনেক বেশি টাকা দাবি করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণা করতে হয়। এ জন্য প্রয়োজন প্রণোদনা। স্বতন্ত্র বেতন স্কেল বলতে আমরা সেটাই বোঝাচ্ছি।

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনে বুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মনজুর মোরশেদ বলেন, আমরা প্রায়ই শুনি—আমাদের ছেলে-মেয়েরা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাদের ধরে রাখা যাচ্ছে না। পড়াশোনা শেষ করেই বিদেশ চলে যাচ্ছে। তাদের ধরে রাখতে হলে আলাদা বেতন স্কেলের প্রয়োজন আছে। শিক্ষকরা খুব নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। তারপরও আমরা কেন পিছিয়ে যাচ্ছি? কারণ, কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রণোদনাটুকু নেই।

এর আগে, পেনশন সংক্রান্ত জারিকৃত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার চেয়ে একটি বিবৃতি দেন বুয়েট শিক্ষক সমিতি।

বিবৃতিতে বুয়েট শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পেনশন স্কিম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে প্রচলিত পেনশন ব্যবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা অভ্যস্ত এবং আর্থিক বিষয়ে এক ধরণের নিরাপত্তা অনুভব করে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশাকে গ্রহণ করার জন্য এই পেনশন ব্যবস্থা একটি অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।

নতুন পেনশন স্কিম শিক্ষকদের মধ্যে হীনমন্যতার সৃষ্টি করবে জানিয়ে তারা বলেন, সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বর্তমান পেনশন ব্যবস্থা বহাল রেখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুবিধা কমানোর প্রচেষ্টার ফলে শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরনের হীনমন্যতা তৈরি হবে। এটা বিবেচনা করা অপরিহার্য যে, মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ এবং নতুন এই পেনশন স্কিম মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করবে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মানের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে এবং ফলস্বরূপ, সমগ্র জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সারাবাংলা/আরআইআর/ইআ

পেনশন বুয়েট শিক্ষক বুয়েট শিক্ষক সমিতি মানববন্ধন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর