রাষ্ট্র ক্ষমতাকে নিজেদের জমিদারি মনে করছে আওয়ামী লীগ
২৬ মে ২০২৪ ২২:৫৫
ঢাকা: স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আজকে দেশে ভোটাধিকার নেই। ২০১৪ থেকে শুরু করে তিন তিনটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জোচ্চুরি ও ভোট ডাকাতির মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। এই ভোটবিহীন নির্বাচনগুলো সরকার সংবিধান রক্ষার দোহাই দিয়ে করে ফেলেছে। কাজেই সংকটের মূলেই বিদ্যমান সংবিধানের ক্ষমতা কাঠামো। এই ক্ষমতা কাঠামোয়ে ন্যূনতম কোনো জবাবদিহির ব্যবস্থা নেই।
অসীম গণবিরোধী ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে অতীতের সকলে এবং বর্তমান আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থায় পরিণত করেছে। ক্ষমতাকে নিজেদের জমিদারি মনে করছে তারা।
রোববার (২৬ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জনগণের মুক্তির সংগ্রাম এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লড়াই’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। গণসংহতি আন্দোলনের প্রথম নির্বাহী সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালামের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশের একজন এমপির নির্মমভাবে খুন হওয়া প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, এই ঘটনা ভীষণ মর্মান্তিক। কিন্তু সেইসঙ্গে এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এমপিদের যে বাস্তবতা সেটি সামনে চলে এসেছে। দেশের রাজনীতি কতটা দুর্বৃত্তায়িত, এ ঘটনাই সেটাই প্রমাণ হয়েছে। আন্তর্জাতিক চোরাকারবারী নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত, ইন্টারপোলের একজন আসামি সরকারি দলের এমপির টিকিটও পেতে পারে। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।
তারা বলেন, সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এস আলাম কোম্পানি আটটি ব্যাংক দখল করে নিয়েছে। অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত পর্যন্ত করা হয়নি। একই সঙ্গে ব্যাংকে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল হচ্ছে এবং একীভূত ব্যাংকগুলোতে পুনরায় দুর্নীতিবাজ ব্যাংক মালিকরা পরিচালকদের দায়িত্ব পাচ্ছেন। অন্যদিকে, দেশের সার্বভৌম ও নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব যে সেনাবাহিনীর সেই বাহিনীর সাবেক সেনাপ্রধান দুর্নীতির অভিযোগে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হচ্ছেন। এই সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ২০১৮ সালের নির্বাচনের পরে বলেছিলেন, এটা নাকি ইতিহাসের অন্যতম সেরা নির্বাচন।
বক্তরা বলেন, সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ যিনি নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি, হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ বানিয়েছেন। এই সরকার বিনা ভোটে ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিদের অবাধে লুটতরাজের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এভাবে প্রত্যেকটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান আজকে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। সরকার সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দখল করেছে। প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেগুলো ধসে গেছে।
গণসংগহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি’র সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এবং গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফাইজুল হাকিম লালা, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম