উপযুক্ত নগরায়নের পথে নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে— সংলাপে বক্তারা
২৮ মে ২০২৪ ২০:১৫
ঢাকা: আমাদের দেশে আগে উন্নয়ন করা হয়, তার পর হয় নগরায়ন। এটি অনেক বড় সমস্যা। উপযুক্ত নগরায়নের পথে নানান চ্যালেঞ্জ আছে এবং চ্যলেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য যৌথভাবে কাজ করছে সরকার।
মঙ্গলবার (২৮ মে) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত ‘অষ্টম নগর সংলাপ-২০২৪’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
‘স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পথে টেকসই নগরায়ন (রেজিলিয়েন্ট সিটিস টুওয়ার্ডস এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন)’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত এই সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ ছাড়া, কি নোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
সংলাপে বক্তারা বলেন, বিভিন্ন দিক থেকে এবারের নগর সংলাপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ২০২৫ সালে চলতি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে এবং ২০২৬ সাল থেকে নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হবে। যার লক্ষ্য হবে এলডিসি পরবর্তী জাতীয় উন্নয়ন, বিশেষ করে নগরভিত্তিক উন্নয়নের জন্য একটি সময়োপযোগী পথনকশা এবং বিনিয়োগ কাঠামো দেওয়া। জনঅংশগ্রহণের ভিত্তিতে সাম্য, ন্যায্যতাভিত্তিক, পরিবেশবান্ধব ও স্থায়ীত্বশীল নগর উন্নয়নের জন্য বাস্তবভিত্তিক অন্তর্ভুক্তমূলক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন এলডিসি উত্তর বাংলাদেশে একটি অবশ্যম্ভাবী বাস্তবতা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা (বাংলাদেশ) মাত্র ০.৪৬ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ করি। তবে আমাদের ওপর যে প্রভাবটা পড়ে, তা আমাদের ভাবিয়ে তোলে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা এখন কোথায় যাব? যারা নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে শহরে চলে আসছে তাদের পাওয়া যায় দুই জায়গায়। তারা থাকছেন বস্তিতে আর ব্যবসা করছেন ফুটপাতে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, শুধুমাত্র ঢাকা উত্তর সিটিতেই এক কোটি বিশ লাখের বেশি লোক বসবাস করে। ঢাকা দক্ষিণেও একই অবস্থা। জনসংখ্যার যে রেইট, প্রতি বর্গকিলোমিটারে উনপঞ্চাশ হাজার, কিছু জায়গায় আরও বেশি। সুতরাং এখানে চ্যলেঞ্জ আছে এবং চ্যলেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার জন্যেই আমরা যৌথভাবে কাজ করছি। একটা সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট এবং অন্যটা লোকাল গভর্নমেন্টের মাধ্যমে কাজ হচ্ছে।’
সংলাপে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে আগে প্ল্যানিং করা হয়, তারপর নগরায়ন হয়। কিন্তু আমাদের দেশে আগে উন্নয়ন করা হয়, তারপর হয় নগরায়ন। এটি অনেক বড় সমস্যা। কারণ, নগরায়ন হয়ে যাওয়ার পরে প্ল্যানিং করাটা প্রকৃত অর্থে কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে যখন ২-৩’শ বছর আগে লন্ডন ফায়ার হয়, এরপর লন্ডন শহরের পুরাতন স্ট্রাকচার ঠিক রেখেই তারা নতুন করে শহরকে গুছিয়ে নিয়েছিল। আমাদের মতো দেশে একটা শহরকে আমরা যদি নতুন করে ঠিক করতে যাই, এটার জন্যে লন্ডন শহরের আরবান রিজেনারেশনের যে কনসেপ্ট আছে সেটা বাস্তবায়ন করতে সিটি করপোরেশন চেয়েছিল। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি।’
সারাবাংলা/আরআইআর/পিটিএম