Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাসিককে ট্যাবু করে রাখায় বাধাগ্রস্ত হয় মেয়েদের জীবনযাপন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৯ মে ২০২৪ ০০:০৯

ঢাকা: মাসিক বা ঋতুস্রাব প্রজনন চক্রের সবচেয়ে প্রাকৃতিক এবং অপরিহার্য অংশগুলোর একটি হলেও এখনো এটি একটি নিষিদ্ধ বিষয় বা ট্যাবু। এটি শুধুমাত্র একটি মেয়েলি সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হয়। ফলে মেয়েদের প্রাত্যহিক জীবনযাপন যেমন বাধাগ্রস্ত হয়, তেমনি তারা নানা অধিকার থেকেও বঞ্চিত হয় বলে এক আলোচনায় উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) বনানীর একটি হোটেলে মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস উপলক্ষ্যে বাংলদেশের মাসিক স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যবিধি (এমএইচএম) প্ল্যাটফর্ম এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশে নারী ও কিশোরীদের মাসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং প্রচারে অবদান রাখছেন এমন নানা খাতের বিভিন্ন খাতের ব্যক্তিরা অংশ নেন। এ আয়োজনে পরিবর্তনের গল্প, সরকারি অঙ্গীকার এবং উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়, যা মাসিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধির সমস্যাগুলো অতিক্রম করতে সহায়তা করবে।

বিভিন্ন সেশনে আলোচকরা বলেন, মাসিক নিয়ে সমাজে অনেক ধরনের কুসংস্কার রয়েছে। এতে দৈনন্দিন কাজে নারীদের নানা তৎপরতা বাধাগ্রস্ত হয় এবং প্রায়ই তাদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে খোলামেলাভাবে আলোচনা করা হয় না।পরিবার বা স্কুল পর্যায়ে যথাযথ নির্দেশনাও দেওয়া হয় না।

উদ্বোধনী বক্তব্যে প্ল্যাটফর্মের চেয়ারপার্সন হাসিন জাহান বাংলাদেশে মাসিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনার কার্যক্রমকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সম্মিলিত প্রয়াসের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিশেষ অতিথি স্থানীয় সরকার বিভাগের পলিসি সাপোর্ট অধিশাখার যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ শামীম আলম মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরার পাশাপাশি এই অধিশাখার নেতৃত্বে তৈরি জাতীয় মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্রাটেজি ২০২১-এর গুরুত্ব তুলে ধরেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) বিভাগের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর ডা. শেখ দাউদ আদনান বলেন, ‘কুসংস্কারের কারণে মেয়েরা এবং নারীরা মাসিকের সময় অস্বাস্থ্যকরভাবে তাদের মাসিক ব্যবস্থাপনা করেন। ফলে তারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন।’

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক প্রফেসর ড. এ কিউ এম শফিউল আজম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এক হাজার স্কুলে শুরু হওয়া ‘জেনারেশন ব্রেকথ্রু’ প্রোগ্রামটি ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেয়েছে, যা আমাদের কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য ও উন্নয়নের প্রতি জাতীয় অঙ্গীকারের কথা বলে। পরবর্তী প্রজন্মকে মাসিক স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও ব্যবহারিক শিক্ষা প্রদানের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর এখন এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগটি সারা বাংলাদেশের সমস্ত স্কুলে সম্প্রসারণের জন্য কাজ করছে।’

অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ পর্ব ছিল যুব ও কিশোর সম্মেলন। এতে তরুণ অংশগ্রহণকারীরা মাসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে তাদের মতামত ও অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে।

মাসিকের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে ও এ বিষয়ে নীরবতা ভাঙতে এবং নারী ও মেয়েরা যেন সুরক্ষিতভাবে, সম্মানের সঙ্গে তাদের মাসিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি পরিচালনা করতে পারে, তা নিশ্চিতে প্রতিবছর ২৮ মে বিশ্বব্যাপী মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস পালন করা হয়। এ বছর মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবসের প্রতিপাদ্য ‘আসুন, সবাই মিলে গড়ি মাসিক-বান্ধব পৃথিবী’।

সারাবাংলা/আরএফ/পিটিএম

ট্যাবু মাসিক মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর