প্রস্তুতি শেষ, ১ জুন থেকে খুলনা-মোংলা রুটে চলবে ট্রেন
২৯ মে ২০২৪ ১০:২০
ঢাকা: আগামী ১ জুন থেকে খুলনা-মোংলা রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে। সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আর এই ট্রেন চলাচলের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৭৩ বছর পর রেল যোগাযোগে যুক্ত হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১০ সালে। এটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। প্রকল্পটি তিনটি ভাগে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে প্যাকেজ-১ রেললাইন নির্মাণ, প্যাকেজ-২ রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু ও প্যাকেজ-৩ টেলিযোগাযোগ ও সিগন্যালিং সিস্টেম। এসব প্রকল্পের আওতায় মূল লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬.৮৭ কিলোমিটার। তার মধ্যে ৬৪.৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ। আর রূপসা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে ৫.১৩ কিলোমিটার রেলসেতু।
জমি অধিগ্রহণ, রেললাইন, রেলসেতু নির্মাণসহ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৭২১ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় তিন হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্প মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ২০২১ সালে আবারও সময় ও ব্যয় দুটিই বাড়ানো হয়। তখন দাঁড়ায় চার হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সেই মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ধরা হয়।
রূপসা নদীর ওপর ৫.১৩ কিলোমিটার সেতু, ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার পথ হলেও স্টেশনগুলোর ডাবললাইন হিসাব করে ৯১ কিলোমিটার পথ, ৯টি প্ল্যাটফর্ম এবং ১০৭টি ছোট সেতু ও ৯টি আন্ডারপাস নির্মাণ শেষ হয়েছে। সেইসঙ্গে সিগন্যালিং ও টেলিকমিউনিকেশন কাজও শেষ হয়েছে। এসব কাজ শেষ করে
২০২৩ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি এই রেলপথ উদ্বোধন করেন।
এর আগে গত ৩০ অক্টোবর ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়। কিন্তু স্থায়ী জনবল নিয়োগসহ নানা জটিলতায় যাত্রী নিয়ে ট্রেন চালু করা যায়নি। এবার যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী।
রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এটা আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন মোংলা বন্দরকে রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত করা। নানা জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ ও উদ্বোধন করা না গেলেও এবার এই পথটি আমরা ১ জুন থেকে যাত্রী চলাচলের জন্য ওপেন করে দেবো।‘
উল্লেখ্য, দেশের বৃহত্তম দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত মোংলা খুলনা শহর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে পশুর নদী ও মোংলা নদীর সংযোগস্থলে বন্দরের অবস্থান।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই পথে ট্রেন চলাচল শুরু হলে এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর দিয়ে দ্রুত কম খরচে মালামাল নিতে পারবেন। গতিশীল হবে মোংলার সঙ্গে যাতায়াত সুবিধা।
আরও পড়ুন:
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, মে মাসেই খুলনা-মোংলা রুটে চলবে ট্রেন
মোংলা-খুলনা রুটে বাজেনি হুইসেল, ট্রেন কবে চলবে জানে না কেউ!
সারাবাংলা/জেআর/এমও