স্মার্ট কৃষিতে প্রযুক্তি হতে হবে কৃষকবান্ধব
৩০ মে ২০২৪ ২১:২২
ঢাকা: স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট এগ্রিকালচারের কোনো বিকল্প নেই। স্মার্ট কৃষি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নে কৃষকবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারে গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষকদের ব্যবহার উপযোগী তথ্যপ্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। দেশের কোথায় কত দামে কৃষিপণ্য বিক্রি হচ্ছে তার একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যেতে পারে। স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষির সাপ্লাই চেইনকে উন্নত করতে হবে। গুরুত্ব দিতে হবে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর ডিসিসিআই ভবেন ঢাকা চেম্বার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্মার্ট এগ্রিকালচার: ভ্যালু চেইন উন্নয়নে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু ও বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘কৃষিখাতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পণ্যের উৎপাদনশীলতা ২০ থেকে ৩০শতাংশ বৃদ্ধি করা যায় সেই। এখাতে ব্যয় ২০ শতাংশ হ্রাসের পাশাপাশি কৃষকের আয় ৩০ থেকে ৪০শতাংশ বাড়ানো সম্ভব। বর্তমানে এ খাতে সাপ্লাইচেইনের অপর্যাপ্ততা, বাজারে পণ্য প্রবেশাধিকারের সুযোগ না থাকা এবং উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সংযোজন প্রভৃতি সমস্যার মুখোমুখী হতে হচ্ছে।’
বিদ্যমান অবস্থা উত্তরণে কৃষি যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন ও কৃষকদের নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা বাড়ানো, কৃষি গবেষণা খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো, প্রয়োজনীয় সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন এবং কার্যকর ভ্যালু চেইন ব্যবস্থার প্রবর্তন ও বাস্তবায়নের ওপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি। কৃষিখাতের সার্বিক উন্নয়নে লজিস্টিক চেইন এবং মার্কেট চেইন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘আমদানি-রফতানিকারকদের সুবিধার্থে খুব শীঘ্রই ঢাকা চেম্বারের একটি পূর্ণাঙ্গ হেল্পডেস্ক স্থাপন করা হবে, যেখান থেকে ‘আইআরসি’ এবং ‘ইআরসি’ সার্টিফিকেট প্রাপ্তির সকল সুবিধা পাওয়া যাবে। এবছরের শেষ নাগাদ ‘যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদফতর (আরজেএসসি)’-এর সেবার সকল কার্যক্রম পেপারলেস করা হবে, ফলে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি কমবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট এগ্রিকালচারের কোনো বিকল্প নেই। পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর ভ্যালু চেইনের গুরুত্ব অপরিসীম। ‘
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম পাচ্ছে না, অপরদিকে ভোক্তারা বেশি দামে পণ্য ক্রয় করছে, মধ্যস্বত্তভোগীরা মুনাফা করছে, তাদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে।’
দেশের কোনো জায়গায় তুলনামূলক কম মূল্যে পণ্য পাওয়া যাচ্ছে, এ ধরনের তথ্য প্রাপ্তির একটি প্ল্যাটফর্ম প্রণয়নের জন্য তথ্য-প্রযুক্তিবিদদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মো. সামসুল আরেফিন বলেন, ‘দেশের কৃষকদের ব্যবহার উপযোগী করে এ খাতের তথ্য-প্রযুক্তি তৈরি করা ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের তরুণ সমাজ সাম্প্রতিক সময়ে কৃষিখাতের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে, যেটা অনেক উৎসাহব্যঞ্জক একটি বিষয়।’
কৃষির উৎপাদিত পণ্য পুনরায় ব্যবহারের ওপর মনোযোগী হওয়ার ওপর তিনি জোরারোপ করেন। এছাড়াও কৃষি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
সেমিনারে আইফার্মার-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ ইফাজ ‘এগ্রো ভ্যালু চেইনে ফ্রন্টিয়ার টেক অটোমেশনের সম্ভাবনা’ এবং সুইসকন্টাক-এর সিনিয়র ম্যানেজার (পোগ্রাম) মোহাম্মদ সাকিব খালেদ ‘স্মার্ট এগ্রিকালচার : ইস্যুস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জস ইন ভ্যালুচেইন ডেভেলমেন্ট’ বিষয়ক দুটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে