‘মুক্তিযুদ্ধে জিয়ার ভূমিকা ইতিহাসের অংশ’
৩০ মে ২০২৪ ২১:৪৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে চট্টগ্রাম বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে নগরীর দুই নম্বর গেইটের বিপ্লব উদ্যানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি।
চট্টগ্রাম নগর বিএনপি
সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর দুই নম্বর গেইটের বিপ্লব উদ্যানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান নগর বিএনপির নেতাকর্মীরা।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর নগর বিএনপির আহবায়ক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে জাতি যখন দিশেহারা তখনই নেতৃত্বশূন্য জাতিকে মুক্তি দিতে এগিয়ে এসেছিলেন জিয়াউর রহমান। এই ষোলশহর বিপ্লব উদ্যানে তিনি পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘উই রিভোল্ট’ বলে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়ে তিনি চুপ করে বসে ছিলেন না। তিনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন, আবার অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন।’
‘শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের মাঠে থেকে দেশকে স্বাধীন করেছেন। সেদিন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই পাশের দেশে চলে গিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালে যাদের জন্ম হয়েছে তারাও আজ আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা ইতিহাসের অংশ, এটাই ইতিহাস। এর বাইরে আর কোনো বক্তব্য থাকতে পারে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ এখন নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ও মিথ্যা ইতিহাস শিখাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের ব্যক্তিগত সততা ও স্বাধীনতা যুদ্ধে ঐতিহাসিক ভূমিকায় তার একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল জনগণের মধ্যে। তিনি প্রচলিত ধারার রাজনীতির বাইরে নতুন একটি রাজনৈতিক তত্ত্ব মানুষের সামনে হাজির করেন। জনগণ তার সে রাজনীতিকে গ্রহণ করেছিল। তার ১৯ দফা কর্মসূচিকে এদেশের মানুষ তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির পথ নির্দেশক বলেই গ্রহণ করেছিল।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, নগর সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুস সাত্তার, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, নগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু।
উত্তর জেলা বিএনপি
বৃহস্পতিবার দুপুরে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে নগরীর কাজির দেউড়ির নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি।
সভায় উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, ‘জিয়াউর রহমান না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা হতো না। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ছিলেন এদেশের কৃষক-মজুর সর্বশ্রেণির নেতা। দেশের সব দুর্যোগে মেজর জিয়াউর রহমান জাতির ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন।’
‘১৯৭১ সালে দেশের নেতৃত্ব যখন দোদুল্যমান, তারা যখন কোনো দিক নির্দেশনা দিতে পারছিলেন না, ঠিক ওই সময় সেনাবাহিনীর একজন মেজর চট্টগ্রাম থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করলেন। ১৯৭৫ সালে আজকের সরকারের পূর্বসূরীরা জাতিকে অন্ধকারের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন। তারপর সিপাহী-জনতা একত্রিত হয়ে জিয়াউর রহমানকে রাজনীতি ও ক্ষমতার সামনে নিয়ে আসেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মানুষের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও একটা মুক্ত বাংলাদেশ তৈরি করেছিলেন। এ জাতি কখনও জাতির অবস্মরণীয় নেতা জিয়াউর রহমানকে ভুলে যাবে না।’
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম এ হালিমের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, সদস্য মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচি।
এর আগে, সকালে নগরীর দুই নম্বর গেইটের বিপ্লব উদ্যানে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় উত্তর জেলা বিএনপির নেতারা।
দক্ষিণ জেলা বিএনপি
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যেগে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। তিনিই জাতির সঙ্কটময় মুহূর্তে বারবার দাঁড়িয়েছিলেন নির্ভয়ে, মাথা উঁচু করে। বিপর্যস্ত জাতিকে রক্ষা করেছেন সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে।’
‘১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চে জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিশেহারা জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার সাহস জুগিয়েছিল। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই তিনি ক্ষান্ত থাকেননি, দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য হানাদারদের বিরুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার এ অতুলনীয় ভূমিকা ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে।’
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনামের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- দক্ষিণ জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য এম মঞ্জুর উদ্দীন চৌধুরী, কামরুল ইসলাম হোসাইনী, এস এম মামুন মিয়া, নুরুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, খোরশেদ আলম, মফজল আহমদ চৌধুরী, মেজবাহ উদ্দিন জাহেদ, আমিনুর রহমান চৌধুরী, নবাব মিয়া, ইসহাক চৌধুরী, হামিদুল হক মান্নান, নুরুল কবির, মঈনুল আলম ছোটন, শফিকুল ইসলাম শফিক ও মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম