বিয়েতে রাজি না হওয়ায় অ্যাসিড ছুড়ে হত্যা, সহকর্মীর মৃত্যুদণ্ড
৩০ মে ২০২৪ ২২:৩৭
যশোর: যশোরের অভয়নগরে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় এক নারী শ্রমিককে অ্যাসিড ছুড়ে ও পিটিয়ে হত্যার দায়ে সহকর্মীকে মৃত্যুদণ্ড সাজা দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও করা হয়েছে। ঘটনার আড়াই বছর পর আদালত এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করলেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) যশোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এম ইদ্রিস আলী বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত শামীম হোসেন কারাগারে আটক রয়েছেন।
এসিড নিক্ষেপ ও হত্যার শিকার কেয়া খাতুন অভয়নগরের কাদিরপাড়া গ্রামে বসবাস করতেন। দণ্ডপ্রাপ্ত শামীম হোসন অভয়নগরের জাফরপুর গ্রামের খন্দকার মোশারফ হোসেনের ছেলে। তারা দুজনেই চামড়ার একটি কারখানায় কাজ করতেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, একযুগ আগে বিয়ে বিচ্ছেদ হলে কেয়া খাতুন তার মেয়েকে নিয়ে মামার বাড়ি অভয়নগরের কাদিরপাড়া গ্রামে বসবাস করছিলেন। সেখানে আকিজ গ্রুপের এসএএফ লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। দণ্ডপ্রাপ্ত শামীম হোসেনও একই কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, একই কারখানায় কর্মরত কেয়াকে একপর্যায়ে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসেন শামীম। কেয়া রাজি না হওয়ায় শামীম তার ক্ষতি করার পরিকল্পনা করেন। ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর কেয়া ও শামীম দুজনে একই শিফটে কাজ করছিলেন। দুপুরে শামীম ফের কেয়াকে প্রস্তাব দেন। কেয়া রাজি না হওয়ায শামীম আগে থেকেই জোগাড় করে রাখা অ্যাসিড কেয়ার গায়ে ঢেলে দেন। কেয়া চিৎকার দিলে শামীম পাশে থাকা লোহার পাইপ দিয়ে তাকে মারধর করেন। কেয়ার চিৎকারে পরে অন্য শ্রমিকরা ছুটে এসে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় কেয়ার মামা লুৎফর রহমান মজুমদার বাদী হয়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে শামীমকে আসামি করে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে শামীমকে একমাত্র অভিযুক্ত করে ২০২২ সালের ১১ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জয়ন্ত সরকার।
দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি শামীম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার রায় দিলেন।
সারাবাংলা/টিআর