Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আয় না বাড়লেও খাদ্যব্যয় বেড়েছে সবচেয়ে বেশি: সিপিডি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২ জুন ২০২৪ ১৭:৫৮

ঢাকা: খাদ্যমূল্য বিবেচনা করলে ২০১৯ সাল থেকে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। মানুষের আয় না বাড়লেও খাদ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। আর মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়েছে গরিব ও সাধারণ মানুষের ওপর। এদিকে, জিডিপিতে জাতীয় আয় বাড়লেও তা কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখতে পারছে না। সবমিলিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারা সরকারের জন্য বড়ধরনের ব্যর্থতা।

রোববার (২ জুন) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৩-২৪: তৃতীয় অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনা’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এ সব কথা বলেন।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘মূল্যস্ফীতিতে আমরা ৯ ও ১০ শতাংশে অবস্থান করছি। যা শ্রীলঙ্কার চেয়েও বেশি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারা সরকারের জন্য বড়ধরনের ব্যর্থতা। যেমন-২০১৯ সালের তুলনায় মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে ১৭ ভাগ, পাইজামের দাম ১৫ ও মোটা চাল ৩০ ভাগ। অর্থাৎ যে পণ্য গরিব ও মধ্যবিত্তরা ব্যবহার করে এবং বাজারে বেশি বিক্রি হয় মুনাফাখোররা সেখানে বেশি লাভ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি মুসর ডাল ৯৫ ভাগ, আটা ৪০-৫৪ ভাগ, ময়দা ৬০ ভাগ, খোলা সয়াবিন ৮৪ ভাগ, বোতলজাত সয়াবিন ৫৬ ভাগ ও পামওয়েলে ১০৬ ভাগ দাম বেড়েছে। এখন গরুর মাংসের দামও বেশি। এ ছাড়া, ব্রয়লার চিকেন ৬০ ভাগ, চিনির দাম ১৫২ ভাগ, গুঁড়া দুধ ৪৬-৮০ ভাগ, পেঁয়াজ ১৬৪ ভাগ, রসুন ৩১০ ও শুকনা মরিচ ১০৫ ভাগ বেড়েছে। যা আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক বেশি। এর কারণ হিসেবে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থায় দুর্বলতা দেখতে পাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিম্ন আয়ের দেশ হয়েও আমরা বিলাসী দেশে পরিণত হয়েছি। আমরা আয় করি কম, কিন্তু খাবারের ক্ষেত্রে ব্যয় সবচেয়ে বেশি। যার ভুক্তভোগী গরিব ও সাধারণ মানুষ। আমরা কোন অর্থনীতির দেশে রয়েছি? সরকারের প্রচেষ্টা রয়েছে। অনেক সময় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক ট্যারিফ কমিয়ে দেয়। তার সুফল তোলেন এক ধরনের ব্যবসায়ী।’

ধনী ও গরিবের বৈষম্য বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে মাথাপিছু অভ্যন্তরীণ আয় ২ হাজার ৬৭৫ মার্কিন ডলার, আর মাথাপিছু জাতীয় আয় ২ হাজার ৭৮৪ ডলার। গরিব মানুষদের কথা বিবেচনা করলে তাদের আয় কমে গেছে, বেড়েছে বৈষম্য। দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ দেখা যাচ্ছে না। সরকারের অতিরিক্ত ঋণ নেওয়া একটি বড় কারণ। বিষয়টি সরকারকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সরকারের সাড়ে ৭ শতাংশ বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে না বলে মনে করছি।’

গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। কিন্তু জানুয়ারিতে তা সংশোধন করে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়। আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা তা আরও কম প্রাক্কলন করেছে। বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক দূরে সরকার। জিডিপির ‍বৃদ্ধির সঙ্গে কর্মসংস্থানের ধারাটি বাড়ছে না, বরং কমছে। জিডিপিতে জাতীয় আয় বাড়ছে, কিন্তু কর্মসংস্থানের ভূমিকা রাখতে পারছে না, বা কম সহায়তা করছে। যতটুকু কর্মসংস্থান হচ্ছে তা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে বাড়ছে, যা আসলে ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ ওই কর্মসংস্থানে মজুরি ও নিরাপত্তার হুমকি রয়েছে।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম

আয় খাদ্যব্যয় টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর