‘সোনা-হীরা চোরাচালানে পাচার ৯১ হাজার কোটি টাকার বেশি’
৩ জুন ২০২৪ ১৪:২৬
ঢাকা: সোনা ও হীরা চোরাচালানের মাধ্যমে দেশ থেকে প্রতি বছর ৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকারও বেশি পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস)। আর এই পুরো টাকা হুন্ডির মাধ্যমে চোরাকারবারিরা বিদেশে পাচার করছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (৩ জুন) রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির বাজুস কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে বাজুসের সহ-সভাপতি ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান মো. রিপনুল হাসান বলেন, ‘প্রতিদিন দেশের জল, স্থল ও আকাশপথে কমপক্ষে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার, সোনার বার, ব্যবহৃত পুরোনো জুয়েলারি (যা ভাঙারি হিসাবে বিবেচিত হয়) ও হীরার অলংকার (ডায়মন্ড জুয়েলারি) চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে। ৩৬৫ দিন বা একবছর শেষে যার পরিমাণ প্রায় ৯১ হাজার ২৫০ কোাটি টাকার বেশি।’
সংগঠনটি জানায়, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সাথে বাংলাদেশের ৩০টি জেলার সীমান্ত অবস্থিত। এর মধ্যে খুলনা বিভাগের ৬ টি মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর ও সাতক্ষীরা জেলা সোনা চোরাচালানের নিরাপদ রুট হয়ে উঠেছে। ভারতে পাচার হওয়া সোনার বড় একটি অংশ এসব জেলার সীমান্ত দিয়ে পাচার হয়ে থাকে। প্রতিদিন সারাদেশের জল, স্থল ও আকাশপথে কমপক্ষে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার, সোনার বার, ব্যবহৃত পুরানো জুয়েলারি ও হীরার অলংকার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে।
প্রতিদিন গড়ে ২২০ কোটি টাকার সোনা ও সোনার অলংকার এবং ৩০ কোটি টাকার হীরা ও হীরার অলংকার বাংলাদেশে আসছে। সে হিসাবে ৩৬৫ দিন বা এক বছরে ৮০ হাজার ৩০০ কোটি টাকার সোনা ও ১০ হাজার ৯৫০ কোটি টাকার হীরা অবৈধভাবে বাংলাদেশে আসছে। এই পুরো টাকাটাই হুন্ডির মাধ্যমে সোনা ও হীরা চোরাকারবারিরা বিদেশে পাচার করে থাকে। যার ফলে সরকার রেমিট্যান্স হারাচ্ছে এবং সোনা ও হীরা চোরাকারবারিরা তাদের অবৈধ অর্থ বিদেশে পাচার করে যাচ্ছে, বলে জানিয়েছে বাজুস।
দেশে চলমান ডলার সংকটে অর্থপাচার ও চোরাচালান বন্ধে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানায় বাজুস। এসময় চোরাচালান বন্ধে বাজুস ৭টি সুপারিশও করেছে। এর মধ্যে ট্যাক্স ফ্রি সোনার অলংকারের ক্ষেত্রে ১০০ গ্রামের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ৫০ গ্রাম করা, একই ধরণের অলংকার দু’টির বেশি না আনা, একইসঙ্গে একজন যাত্রীকে বছরে শুধুমাত্র একবার ব্যাগেজ রুলের সুবিধা নিতে পারবে এমন বিধান করার সুপারিশও করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল, বাজুসের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমও