ফলদ, বনজ এবং ভেষজ গাছ লাগানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
৫ জুন ২০২৪ ১৫:৩১
ঢাকা: প্রত্যেক নাগরিককে অন্তত একটি করে ফলদ, বনজ এবং ভেষজ গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য দেশ এবং দেশের মানুষকে সুরক্ষিত করা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করা, প্রকৃতিকে রক্ষা করা। সুন্দর জীবন, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে সুন্দর পরিবেশ দরকার।’
বুধবার (জুন ৫) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০২৪’ এবং ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৪ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট এবং তার পরবর্তী দুই বছর এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি। ২০১৩ সালে সরকার উৎখাতের আন্দোলনের নামে মানুষকে যেমন হত্যা করা। বাস, ট্রাক, গাড়ি, রেল, লঞ্চ, সেগুলো আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া আর বৃক্ষনিধন করা হয়। লক্ষ লক্ষ বৃক্ষ কেটে ফেলে দেয় জামায়াত-বিএনপি। আমরা যেখানে গাছ লাগিয়েছে সেগুলো তারা ধ্বংস করেছে। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্যের বিষয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবার কাছে অনুরোধ থাকবে যেখানেই পারেন আপনারা গাছ লাগান। ফলের গাছ লাগালে ফল খেতে পারবেন। আর বনজ গাছ লাগালে সেটা বড় হলে বিক্রি করে টাকা পাবেন। ভালো টাকা পাওয়া যায় এখন। আর ওষধি গাছ সেটা ওষুধ তৈরি বা বিভিন্ন কাজে লাগে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবাই যদি গাছ লাগায়, শুধু আমাদের বাড়িঘর না, কর্মস্থল, অফিস আদালত, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা যেখানেই জায়গা আছে সেখানে গাছ লাগান। আপনারা যদি গাছ লাগান এত গরমে গাছের নিচে গেলে ছায়াটা পাবেন, ছায়াটা কিন্তু বেশ ঠাণ্ডা, আরামদায়ক।’
ছাদ বাগানসহ গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজের হাতে গাছ লাগানোর তৃপ্তিটাই আলাদা। আমরা চাই, প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে দেশকে রক্ষা করতে, দেশের মানুষকে রক্ষা করতে, সেই সঙ্গে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে; খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে। আমাদের লক্ষ্য দেশ এবং দেশের মানুষকে সুরক্ষিত করা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করা, প্রকৃতিকে রক্ষা করা। সুন্দর জীবন, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে সুন্দর পরিবেশ দরকার।’
অতিমাত্রায় কীটনাশক, রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে প্রাকৃতিকভাবে পোকামাকড় দমন এবং মাটির উর্বরতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে তিনি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পলাশ এবং কদবেল গাছের চারা রোপণ করে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান উদ্বোধন করেন।
শের-ই-বাংলা নগরে ৫ থেকে ১১ জুন পর্যন্ত চলবে পরিবেশ মেলা এবং ৫ জুন থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত চলবে বৃক্ষমেলা। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী বন্য প্রাণী সংরক্ষণে বঙ্গবন্ধু পুরস্কার ২০২৩ ও ২০২৪; জাতীয় পরিবেশ পুরস্কার ২০২৩ এবং বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০২২ ও ২০২৩ বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। এছাড়া সামাজিক বনায়নে উপকারভোগীদের মাঝে লভ্যাংশের চেক বিতরণ করে প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।
সারাবাংলা/এনআর/এমও