চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোরবানির জন্য প্রস্তত ২ লাখ পশু, শঙ্কা দাম নিয়ে
৮ জুন ২০২৪ ০৮:৩২
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ২ লাখ পশু। জেলার ১৩ হাজারেরও বেশি খামারি এসব পশু প্রস্তুত করেছেন। তবে পশু পালন করতে গিয়ে খাবারের খরচ বেশি হওয়ায় প্রত্যাশিত দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন খামারিরা।
সংশ্লিষ্ট খামারিদের মাধ্যমে জানা যায়, ইতিমধ্যে কোরবানির পশু স্বল্প পরিসরে ক্রয়-বিক্রয় শুরু হয়েছে। শেষ মুহূর্তে গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। গরুকে খাবার হিসেবে কাঁচা ঘাস, খৈল, ভুট্টা এবং ধানের কুড়াসহ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়াচ্ছেন। এছাড়া পশু খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনে খরচ অনেকটাই বেড়েছে বলে জানান খামারিরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নামোশংকরবাটি এলাকার মো. আমির আলী বলেন, ‘আমার খামারে ৫০টির মতো গরু ছিল, ইতিমধ্যে ৩০টি বিক্রি হয়ে গেছে। কোরবানির জন্য প্রাকৃতিক খাদ্য খাইয়ে দেশি জাতের গরু কোরবানির বাজারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছি। এসব গরুকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাদ্য খাওয়ানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গরুগুলোকে প্রতিদিন দুই বেলা প্রাকৃতিক খাদ্য যেমন ভুট্টা, খৈল, কাঁচা ঘাস, গমের ভুসি ও খড় খাওয়ানো হয়। দিনে দুই-তিনবার গোসল করানো হয়। পশুর থাকার জায়গা সবসময় পরিষ্কার রাখাসহ সার্বক্ষণিক ফ্যান চালিয়ে পরিবেশ ঠাণ্ডা রাখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে গরু পালনে খরচ বেড়েছে অনেক। সে তুলনায় এবার দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে না।’
গোমস্তাপুর উপজেলার গরু খামারি মনা বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার গো খাদ্যের দাম তুলনামূলক বেশি। তাই সব মিলে একটি গরুর পেছনে যে ব্যয় হয় তা পুষিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হবে।’
এছাড়া তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবারই কোরবানির ঈদের সময় চোরাই পথে ভারতীয় গরু প্রবেশ করে। যার ফলে দেশের খামারিরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আশা করছি এবারে তেমনটা হবে না। যার ফলে আমরা খামারিরা লাভবান হবো।’
বিজিবি-৫৯ ব্যটলিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, গরু চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির জিরো টলারেন্স থাকবে। এছাড়া সীমান্তবর্তী এলাকাসমূহে টহল টিম জোরদার করা হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের সূত্র জানায়, এবার কোরবানির ঈদের জন্য জেলায় বাণিজ্যিক ও পারিবারিক ভাবে ১ লাখ ৮২ হাজার ১৬৭টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু রয়েছে ১ লাখ ৬২৯টি, ছাগল রয়েছে ৭০ হাজার ১৩১টি এবং ভেড়া রয়েছে ১০ হাজার ৯১৯টি। জেলায় গরু, ছাগল ও ভেড়ার চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৯৫২টি। উদ্বৃত্ত রয়েছে ৫২ হাজার ২১৫টি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রায় দুই লাখ কোরবানি যোগ্য পশু প্রস্তত রয়েছে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরেও বিক্রি করতে পারবেন খামারিরা। খামারিরা যেন প্রাকৃতিক উপায়ে গরু লালন পালন করতে পারে সেই বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি এবং পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। প্রতিবছরের মতো এবছরেও দেশি গরু দিয়ে কোরবানি সম্পন্ন হবে।’
জেলায় স্থানীয় ভাবে যে ১৭টি গরুর হাট রয়েছে সেখানে আমাদের ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম থাকবে। আশা করছি আসন্ন কোরবানির ঈদে হাটে আগত ব্যবসায়ী ও খামারিরা নির্বিঘ্নে তাদের পশু বিক্রি করতে পারবে এবং খামারিরা লাভবান হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন জেলার এই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
সারাবাংলা/এমও