Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পরীক্ষা কেন্দ্রে নকলসহ ধরা ছাত্রলীগ নেতা, ব্যবস্থা নেয়নি বিভাগ

জবি করেসপন্ডেন্ট
৭ জুন ২০২৪ ২২:৫৩

ঢাকা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী সাজবুল ইসলাম পরীক্ষায় নকল নিয়ে ধরা পড়লেও নেওয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। নকল নিয়ে ধরা পড়া সাজবুল ইসলাম ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের কাছের অনুসারী বলে ক্যম্পাসে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মারধরসহ আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৩ জুন) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ‘সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইন ইসলাম’ কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন নকল করার অভিযোগ ওঠে। এ সময় হাতেনাতে নকল ধরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার হল পরিদর্শক সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ছালেহ উদ্দীন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। এ সময় ‘সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইন ইসলাম’ কের্সের পরীক্ষায় হল পরিদর্শক ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ছালেহ উদ্দীন। পরীক্ষায় খাতার নিচে নকল কপি রেখে লিখছিলেন। দায়িত্বরত শিক্ষক ছালেহ উদ্দীন তা দেখা মাত্র খাতা নিয়ে নেন। কিন্তু সেই ছাত্রলীগ নেতা সাজবুলের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ আবদুল ওদুদ। সাজবুল বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় সেই প্রভাবের কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেননি বিভাগীয় প্রধান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর সূত্রে জানা যায়, যদি কোনো বিভাগে পরীক্ষার হলে নকলের ঘটনা ঘটলে, তাহলে প্রথমে নকলের প্রমাণসহ বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরে সবকিছু যাচাই করার পর তা শৃঙ্খলা উপকমিটির কাছে পাঠানো হয়। শৃঙ্খলা উপকমিটিতে সবকিছু পর্যালোচনার পর অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর জন্য শাস্তি সুপারিশ করে শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানো হয়। সবশেষে শৃঙ্খলা কমিটিতে শান্তিদানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। তবে ছাত্রলীগ নেতা সাজবুল নকলসহ হাতেনাতে ধরা পড়ার পরও বিভাগ থেকে তার নামে কোনো অভিযোগ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরে পাঠানো হয়নি।

বিজ্ঞাপন

শৃঙ্খলা উপকমিটির আহ্বায়ক হলেন আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাসুম বিল্লাহ এবং অন্য সদস্যরা হলেন- কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হোসনে আরা , প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও পরীক্ষা নিযন্ত্রক জহুরুল ইসলাম।

এ বিষয়ে ওই সেমিস্টারের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল ওদুদকে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ফোনে এ বিষয়ে কোন কথা বলতে বলতে চাই না।’

প্রতিবেদককে তিনি অফিস টাইমে তার সামনে গিয়ে কথা বলতে বলে ফোন কেটে দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) জহুরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি অসুস্থতার কথা বলে ফোনে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতা সাজবুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে ফাও খাওয়ার পর খাবারের বিল চাওয়ায় ক্যান্টিনের এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগও রয়েছে। এছাড়াও ক্যাম্পাসের আশেপাশের বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদাবাজি, বাসস্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলা সহ ক্যাম্পাসের সামনে চলাচলকারী বিভিন্ন বাস ও ট্রাকের ড্রাইভারদের কাছ থেকে চাঁদাবাজিরও অভিযোগও রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এসব অভিযোগ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।

সারাবাংলা/একে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় জবি নকল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর